নয়াদিল্লি: দীর্ঘ দিন প্রথমস্থান ধরে রাখার পর সেই জায়গা হাতছাড়া হয়েছে চিনের৷ জনসংখ্যার বিচারে ড্রাগনের দেশকে পিছনে ফেলে পয়লা নম্বরে উঠে এসেছে ভারত৷ এদিকে, ক্রমাগত জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার ঘটনায় রীতিমতো উদ্বেগে বেজিং৷ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একের পর এক কৌশল অবলম্বন করে চলেছে চিনা সরকার৷ ফলে ভারত কতদিন শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
ইতিমধ্যেই জনসংখ্যা হ্রাস বা এক সন্তান নীতি থেকে সরে এসেছে চিন। এক সময় জন্মহার কমানোর লক্ষ্যে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছিল সে দেশের প্রশাসন। এই নীতিই এখন বুমেরাং হয়ে আঘাত হেনেছে তাদের উপরে৷ বিগত ৬০ বছর ধরে ক্রমশ কমছে চিনের জনসংখ্যা। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এবার জন্মহার বাড়াতে উদ্যোগী বেজিং৷ নয়া পন্থা গ্রহণ করতে চলেছে সরকার। তাতে বলা হয়েছে, এবার অবিবাহিত মহিলারাও আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে মা হতে পারবেন। সিঙ্গল মাদাররা মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন সরকারের তরফে।
যদিও আইভিএফ পদ্ধতি নিয়ে এখনও সরকারি ভাবে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কোন ঘোষণা করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, সারাদেশে এই নীতি চালু করার ব্যাপারে গভীর ভাবেই চিন্তাভাবনা করছে জি জিনপিং প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ স্থানীয় সংবাদপত্রের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সিচুয়ান প্রদেশে ৩৩ বছর বয়সি এক ডিভোর্সি মহিলাকে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। ওই মহিলার নাম চেন লুওজিন৷ তবে সরকারি হাসপাতালে নয়, বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণের জন্য চিকিৎসা করাতে হবে তাঁকে। চেনের কথায়, ‘আমি প্রশাসনের সিদ্ধান্তে খুশি। ধীরে ধীরে দেশে লাগু থাকা নীতিগুলির পরিবর্তন হচ্ছে। আমি জানি অনেক অবিবাহিত মহিলা এই পদ্ধতিতে মা হয়েছেন।’
গত ছ’দশকে এক সন্তান নীতি সহ জন্ম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়াই চিনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে জন্মহার। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত মার্চ মাসে অবিবাহিত মহিলাদের আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি সাংহাই এবং দক্ষিণের গুয়াংডং প্রদেশের প্রশাসন অবিবাহিত মহিলাদের সন্তান ধারণের অনুমতি দিয়েছে। তবে তারা আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার অনুমতি পাননি৷
এখানেই শেষ নয়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত এপ্রিল মাসে চিনের নয়টি কলেজের পড়ুয়াদের ‘প্রেমে পড়ার জন্য’ এক সপ্তাহের ছুটি দিয়েছিল৷ এর মধ্যে ফাং মি এডুকেশন গ্রুপই সর্বপ্রথম এই পদক্ষেপ করে। এই সময়ের মধ্যে পড়ুয়াদের প্রেমে পড়তে, সম্পর্কের জটিলতা মিটিয়ে নিতে, প্রিয়জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে বলা হয়। শিক্ষার্থীদের ‘প্রকৃতিকে ভালবাসতে, জীবনকে ভালবাসতে এবং বসন্তের বিরতি উপভোগ করার মাধ্যমে ভালবাসা উপভোগ করতে’ উৎসাহিত করা হয়৷
পাশাপাশি মহিলারা যাতে আরও বেশি করে সন্তানধারণ করতে পারেন, সে জন্য নয়া আইনও আনা হয়৷ তাতে বলা হয়, মা হতে গেলে এখন থেকে বিবাহিত না হলেও চলবে। সন্তানধারণের সুবিধা করে দিতেই এই ব্যবস্থা করে সরকার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন