দুই হাত নেই, পা দিয়ে লিখে ছাত্রদের আলো দেখান জগন্নাথ - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

দুই হাত নেই, পা দিয়ে লিখে ছাত্রদের আলো দেখান জগন্নাথ



কাটোয়া: জন্ম থেকেই তাঁর দু’টি হাত নেই। দুই পা-ই তাঁর ভরসা। পা দিয়েই চামচে করে খান। আবার পা দিয়েই স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে চক ডাস্টার দিয়ে পড়ুয়াদের পড়ান। আউশগ্রামের জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জগন্নাথ বাউড়ি ছোটদের আলো দেখাচ্ছেন। প্রতিবন্ধকতা জয় করে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয় দেখিয়ে দিয়েছেন। তবে রথের রশিতে টান না দিতে পারার আক্ষেপ নেই তাঁর। 

হাত না থাকায় তাঁর মা নাম রেখেছিলেন জগন্নাথ। আউশগ্রাম-১ ব্লকের বেলুটি গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের জগন্নাথবাবু। তবে এনিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। কোনও প্রতিবন্ধকতা তাঁর জীবনে বাধা হতে পারেনি। শুধু মনের অদম্য জেদে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ২০১০সালের জানুয়ারিতে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। চাকরি পাওয়ার আগে ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নকর্তাদের সামনে বোর্ডে পা দিয়েই লিখেছিলেন। 

জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের বেলুটি গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ বাউড়ি ও সুমিত্রাদেবীর দুই ছেলে। জগন্নাথ ও বলরাম। জগন্নাথবাবুই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। বাবা দিনমজুরি করে একসময় সংসার চালাতেন। এখন জগন্নাথবাবু জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বাড়িতে বাবা ও মা ছাড়াও রয়েছেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। এক দিদির মৃত্যুর পর থেকে ছোট ভাগনা-ভাগনির দায়িত্বও তিনিই সামলাচ্ছেন। ভালোবেসে নওদার ঢালের বাসিন্দা লক্ষ্মীদেবীকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। 

মেয়ে ঋত্বিকা ও ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ছোট থেকে অভাবের সংসারেই মানুষ হয়েছিলেন তিনি। খুব কষ্ট করেই লেখাপড়া শিখেছেন। হাত না থাকায় ছোট থেকেই পা দিয়ে পড়াশোনা সহ সমস্ত কাজের অভ্যাস করেছিলেন জগন্নাথবাবু। ছোট থেকেই জগন্নাথের অদম্য মানসিকতা ছিল। নিজের চেষ্টাতেই ছোট থেকে পায়ে পেন-পেন্সিল ধরে লেখালেখি শুরু করেন। আবার গানও করেন। স্কুলছুট কমাতে এলাকায় গিয়ে অভিভাবকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝান তিনি। পাশাপাশি খেলাধুলোর জন্যও পড়ুয়াদের উৎসাহ জোগান। 

জগন্নাথবাবুর এক বন্ধু জানান, অনেক শিক্ষক শিক্ষিকার থেকেও জগন্নাথ ভালো বোর্ডওয়ার্ক করেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে কীভাবে আদর্শ শিক্ষক ও যোগ্য মানুষ হয়ে ওঠা যায়। ও অত্যন্ত ভালো মানুষ। জগন্নাথবাবু বলেন, রথের রশিতে টান দিতে পারি না।  তবে তা নিয়ে আমার আক্ষেপ নেই। একসময় মাথা গুঁজে থাকার মতো বাড়ি ছিল না। এখন চাকরি পেয়ে বাড়ি করেছি। ছোটদের ভালোভাবে শেখানোর চেষ্টা করি। ওরাই আমার সব। বাড়ি থেকে স্কুল তিন কিলোমিটার দূরত্ব। আমি প্রতিদিন হেঁটেই যাতায়াত করি। গাড়ি ব্যবহার করি না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...