কলকাতা: নির্ধারিত দিনের একদিন পরে, মঙ্গলবার সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক হল। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সমিতির সভাপতি তথা বজবজের বিধায়ক অশোক দেব এদিন বৈঠকে যোগ দেন। ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ও। সাত সদস্য নিয়ে বৈঠক শেষে অশোকবাবু বলেন, ‘দোষীদের কড়া শাস্তি চাই। তিনজনকেই বরখাস্ত করা হয়েছে। পরিবার যদি চায় আমরা নির্যাতিতার চিকিৎসার ব্যয় বহন করব। আমরা চাই কলেজে শান্তি সুরক্ষা দ্রুত ফিরে আসুক। আপাতত ক্লাস বন্ধ থাকছে। তবে যেহেতু ফর্ম ফিলাপ চলছে, তাই শুধুমাত্র কলেজের অফিস খোলা থাকছে। শিক্ষক, অশিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সবাইকে পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘যারা এই কাজ করেছে তাদের ফাঁসি চাই। কলেজ থেকে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে ধৃত আর-এক অস্থায়ী কর্মীকেও।’
উচ্চশিক্ষা দপ্তর সোমবারই কলেজ কর্তৃপক্ষকে সাত দফা নির্দেশ দিয়েছিল। তাতে মনোজিৎকে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং জইব ও প্রমিতকে কলেজ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ ছিল। বেসরকারি সিকিওরিটি এজেন্সিকেও শোকজ করতে বলা হয়। এদিনের বৈঠকে সমস্ত নির্দেশই মানা হয়েছে। মনোজিৎকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাকে বেতন বাবদ প্রাপ্ত অর্থও ফেরাতে বলা হবে। ওই এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের আইকার্ড দেখে ঢোকানো, দুপুর ২টোর পরে কোনও পড়ুয়াকে ঢুকতে না-দেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ের পরে ক্যাম্পাস খালি করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
যে পরিচালন সমিতি মনোজিৎকে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ করেছিল, তার সভাপতি অশোক দেব। তিনি কি দায় এড়াতে পারেন? এই প্রসঙ্গে বিধানসভায় অশোক দেব বলেন, ‘ওই ছেলেটি ব্যক্তিগত জীবনে কী করে, তা আমি জানব কী করে?’
তিনি এও জানান, ঘটনায় তিনি মর্মাহত। রাজনৈতিক জীবনে এমন ঘটনার সম্মুখীন তাঁকে কখনও হতে হয়নি। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি বিচার পেতে মেয়েটির পাশে থাকারই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার জেরে কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘কলেজের গেট বন্ধ করে দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়। পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনওভাবেই কাম্য নয়। এই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের চিন্তাভাবনা করা উচিত।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন