শ্রীনগর: কাশ্মীরে এক রাস্তার ধারে কার্পেট পেতে বসেছেন তিনি। সামনে রাখা ছোট্ট কাঠের গুঁড়ি। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাজা গ্রেনেড। হাতের কাছে পড়ে বেশ কয়েকটি ড্রোনও। অবাক হলেন? না, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। উপত্যকার খোলা বাজারে আগ্নেয়াস্ত্র কেনা-বেচা চলছে না। অপারেশন সিন্দুরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ড্রোন কাবাব, গ্রেনেড কাবাব, মিট কর্ন থেকে শুরু করে নানা রকমের খাবার বানিয়েছেন এক ওয়াজা (রাঁধুনি)। একাধিক পদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ‘ওয়াজাহান’ বহুকাল ধরে কাশ্মীরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে। এবার সেই বহুল জনপ্রিয় ‘মাল্টি কোর্স মিল’-এ আরও কিছু নতুন ধরনের পদ যুক্ত করেছেন স্থানীয় এই ওয়াজা। তা দেখতেই ভিড় জমেছে। তবে খরচ সাপেক্ষ ওয়াজাহানে ফের নতুন পদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয়দের একাংশ। তাঁদের কথায়, এমনিতেই প্রথা মেনে বিয়েবাড়ি সহ নানা অনুষ্ঠানে ওয়াজাহান তৈরি করতে হয়। পকেট থেকে মোটা টাকা খসে যায়। নতুন নতুন খাবার ঢুকে তালিকা আরও দীর্ঘ হলে, বিপদে পড়তে হবে। কোনওভাবেই এই বাড়বাড়ন্ত মেনে নেওয়া যায় না।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ওই ওয়াজার ভিডিও। তা নিয়ে নেটিজেনদের একাংশের বক্তব্য, উপত্যকার বহু মানুষ পয়সার অভাবে এই রাজকীয় আয়োজন করতে পারেন না। এর জেরে অনেকের বিয়েও পিছিয়ে যায়। এখন আবার ড্রোন, গ্রেনেড এসব যুক্ত হচ্ছে। এ তো উটকো ঝামেলা আর বিপুল টাকার শ্রাদ্ধ। বিয়েবাড়ি নাকি মাংসের যুদ্ধক্ষেত্র? অবিলম্বে কাশ্মীরিদের এক হয়ে প্রতিবাদ জানানো উচিত। কেউ কেউ আবার সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ওয়াজাহানে সর্বোচ্চ পদের সংখ্যা ৩২। কয়েকঘণ্টা ধরে একের পর এক খাবার তৈরি করেন দক্ষ ওয়াজারা। এরপর বড় তামার থালায় (ত্রামি) সাজিয়ে তা অতিথিদের পেশ করা হয়। একটি ত্রামি থেকে চারজন পেট ভরে খেতে পারেন। ইতিমধ্যেই ওয়াজাহানের জি আই ট্যাগের দাবিতে সরব হয়েছিলেন জনপ্রিয় রাঁধুনি সঞ্জয় রায়না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন