অগ্নিমূল্য সার, বস্তায় মোদির ছবি! বুমেরাং প্রচার কৌশল, ক্ষুব্ধ কৃষকদের টিপ্পনি - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

অগ্নিমূল্য সার, বস্তায় মোদির ছবি! বুমেরাং প্রচার কৌশল, ক্ষুব্ধ কৃষকদের টিপ্পনি



বর্ধমান: সারের দাম আকাশছোঁয়া। ঘুম উবেছে কৃষকদের। আর সেই সারের বস্তায় কি না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির ছবি! বছর ঘুরলেই বাংলায় ভোট। এখন থেকেই কার্যত প্রচারে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। সারের বস্তায় মোদির ছবিও গেরুয়া শিবিরের অভিনব প্রচার কৌশল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু, তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কেননা, এমনিতেই সারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি। তার উপর ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না সেভাবে। সবমিলিয়ে, বেজায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি তাঁদের মনজয়ে কতখানি সহায়ক হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই বর্ধমানের কৃষকদের একটা বড় অংশ মোদির ছবি দেখে টিপ্পনি কাটতে শুরু করেছেন। তাঁরা বলছেন, ‘এসব আসলে আত্মপ্রচার। চাষিদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার সদর্থক কোনও উদ্যোগ নেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের।’     

ভারতে ‘এক জাতি. এক সার’ ভাবনা থেকে কেন্দ্র একটি প্রকল্প গ্রহণ করে কেন্দ্র।  যার প্রতীকী নাম, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন উর্বরক পরিযোজনা’। প্রকল্পের অধীন গোটা দেশে প্রায় ৬০০টি প্রধানমন্ত্রী সমৃদ্ধি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এগুলি মূলত সরকার ও চাষিদের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করছে। পাশাপাশি, সারের বিপণনও করা হচ্ছে। ওইসব সারের বস্তায় প্রকল্পের নাম সহ প্রধানমন্ত্রীর ছবি সাঁটানো হয়েছে। কোথাও তিনি গম্ভীর। আবার কোথাও তাঁর মুখে চওড়া হাসি। কিন্তু, মোদির এই ছবি কি আদৌ কৃষকদের মনজয় করতে পারবে? কৃষকদের দুর্দশা মোচনে তিনি কতটাই বা উদ্যোগী? ক’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী দুর্গাপুরে সভা করতে এসেছিলেন। কৃষকরা প্রত্যাশা করেছিলেন, মোদি সারের ভর্তুকি বাড়ানোর কথা ঘোষণা করবেন। নিদেনপক্ষে দুর্গাপুরে বন্ধ সার কারখানা খোলার আশ্বাস দেবেন। সে সব আশা-প্রত্যাশায় জল ঢেলে যে কৃষকদের প্রকৃত বন্ধু হওয়া যায় না, তা মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। চাষিরাও বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষকের বন্ধু হলে সারের দাম কমানোর কথা ঘোষণা করতেন। ইউরিয়া, ডিএপি সহ বিভিন্ন ধরণের সার কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে। ছবি সাঁটানো সারের বস্তার দাম তো কমছেই না!’ 

গলসির চাষি বাবু শেখ বলেন, ‘কেন্দ্র অনেক সময় রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পাঠায় না। ফলে, এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কালোবাজারি শুরু করে। এমআরপি’র থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হয়। গত কয়েক বছর ধরে সারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সারের সঙ্গে চাষিদের অণুখাদ্য কিনতেও বাধ্য করছে কেন্দ্র। যেটা চাষের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। কিন্তু, অণুখাদ্য না কিনলে বিক্রেতারা সার বিক্রি করে না।’ গলসির আর এক চাষি বলছিলেন, প্র‘তি বস্তা ইফকো সারের দাম এক হাজার ৮৫০ টাকা। করমণ্ডল সারের দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা। প্রতি বস্তা পরশ সারের দাম এক হাজার ৮৫০ টাকা।’ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের মেন্টর মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘প্রধনমন্ত্রী কোনও দিনই চাষিদের বন্ধু ছিলেন না। সার কিনতে চাষিদের পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। অথচ, সারের বস্তায় প্রধানমন্ত্রীর হাসি মুখের ছবি দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়।’

কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ধান চাষের মরশুম। এই সময় ডিএপি সারের বেশি প্রয়োজন হয়। আলু চাষের সময় ১০: ২৬: ২৬ সার বেশি লাগে।  দু’টি সারের দামই হু হু করে বাড়ছে। সেদিকে কেন্দ্রের নজর নেই। শুধু গালভারি প্রকল্প ঘোষণা করে আত্মপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে চাষিদের অভিযোগ। সেই তালিকায় সংযোজন সারের বস্তায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি। বিজেপি নেতা মৃত্যুজ্ঞয় চন্দ্র বলেন, ‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত সার পাঠায় রাজ্যে। রাজ্য সরকারের নজরদারির অভাবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা ফায়দা তোলে। অতিরিক্ত দাম নিলেও সেই রসিদ দেয় না। এমআরপি অনুযায়ী রসিদ দেয়।’-

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...