ঢাকা: রাজধানী ঢাকার স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেল। মঙ্গলবার মোট ৩১ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মিডিয়া শাখা ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা ১৬৫। মৃতদের মধ্যে মধ্যে ২৫ জন জনই পড়ুয়া। তাদের অধিকাংশের বয়স ১২ বছরের মধ্যে। এছাড়া বায়ুসেনার বিমানের দুই পাইলট এবং দু’জন শিক্ষকও রয়েছেন মৃতদের তালিকায়। যদিও বেসরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। সংখ্যাটি প্রায় ১৫০ বলে দাবি করা হচ্ছে। যদিও এসব গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইউনুস সরকার। এরই মধ্যে এদিন বিকেলে পড়ুয়া ও পুলিস সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ঢাকার সচিবালয়। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন অন্তত ৪০ ছাত্রছাত্রী।
সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপর ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তিন উপদেষ্টা ও সরকারের পদস্থ কর্তারা। তাঁদের কলেজের মধ্যে ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়ারা। এদিন সকাল থেকেই মাইলস্টোন কলেজের বাইরে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা জড়ো হন। তাঁরা মৃত ও আহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশের দাবি তোলেন। সেইসঙ্গে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার এবং পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ করায় সেনাবাহিনীকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার হন। সকাল ১০টা নাগাদ ইউনুস সরকারের প্রেসসচিব শফিকুল আলম, শিক্ষা ও আইন উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং আসিফ নজরুল ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তিন উপদেষ্টাকে ঘিরে ধরেন পড়ুয়ারা। আফিস নজরুল বলেন, পড়ুয়াদের দাবির যুক্তি রয়েছে। সরকার তাঁদের সব দাবি মেনে নেবে। তবে আশ্বাসের পরও বিক্ষোভ থামেনি। পরে কঠোর নিরাপত্তায় তাঁদের বের নিয়ে আসে পুলিস ও সেনা। সরকারের তরফে জানান হয়, দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। মৃত ও আহতেদর সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে সরকার, সেনাবাহিনী, হাসপাতাল ও স্কুল কর্তৃপক্ষ একযোগে কাজ করছে।
এদিন স্থানীয় সময় বিকেল চারটে নাগাদ শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগ সহ বিভিন্ন দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সচিবালয়। শতাধিক পড়ুয়া সচিবালয়ের গেট টপকে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। নিরপত্তা বাহিনী ও পুলিসের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে করে ইট, পাথর ছোড়ে পড়ুয়ারা। পাল্টা টিয়ার গ্যাসের সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিস। দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন পড়ুয়া জখম হন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন