উন্নয়ন দূরঅস্ত, ঋণশোধেই শেষ কেন্দ্রের রাজস্ব, আরবিআই রিপোর্ট - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

উন্নয়ন দূরঅস্ত, ঋণশোধেই শেষ কেন্দ্রের রাজস্ব, আরবিআই রিপোর্ট



কলকাতা: জার্মানিকে পিছনে ফেলে ভারত নাকি শীঘ্রই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে! বাস্তবে না হলেও মোদি সরকারের প্রচারে এই সমীকরণ আলবাৎ আছে। কিন্তু সরকারের চালিকা শক্তি যারা, তারাই কি এই প্রচারে সিলমোহর দিচ্ছে? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলির ব্র্যাকেটে যে দেশগুলি রয়েছে, তাদের মধ্যে আর্থিক ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি ভারতে। দেশে যেভাবে জিডিপির তুলনায় ঋণের বোঝা বেড়ে চলেছে, তা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। সাধারণ মানুষের জন্য উন্নয়ন বা নাগরিকদের সুরাহা দেওয়া দূরঅস্ত, ক্রমশই সঙ্গীন হচ্ছে ঋণ শোধের পরিস্থিতি। পরিস্থিতি এমন যে, ভারতে সরকারিভাবে যে রাজস্ব আদায় হয়, তার সিংহভাগই চলে যাচ্ছে ঋণের উপর জমতে থাকা সুদের বোঝা বইতে। শুধু সুদের অর্থ বহনের নিরিখে সমগোত্রীয় দেশগুলির মধ্যে মোদির ভারতের স্থান সবচেয়ে খারাপ।

দেশের অর্থনীতির হাল বোঝাতে জিডিপি এবং সরকারের নেওয়া মোট ঋণের তুলনা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তারা জানাচ্ছে, দেশের নেওয়া ঋণ এবং জিডিপির অনুপাত ৮১.৩। অর্থাৎ, দেশের অর্থনীতির মোট পরিমাণ ১০০ টাকা হলে ঋণের পরিমাণ ৮১.৩ টাকা। এক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় ঋণের বোঝা আরও বেশি ব্রাজিল এবং আর্জেন্তিনার। তবে ভারতের তুলনায় পরিস্থিতি অনেক ভালো দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক এবং রাশিয়ার। এই হিসেব স্পষ্ট করেছে, দেশে ঋণ শোধের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। সেই বোঝা চাপছে সাধারণ মানুষের উপর। ভারতবাসীর মাথাপিছু ঋণের পরিমাণও হচ্ছে লাগামছাড়া।

দেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করতে আরও একটি সূত্র সামনে এনেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। দেশে যা রাজস্ব আদায় হয় এবং তা থেকে যা খরচ হয়, এই আয় -ব্যয়ের হিসেবকে জিডিপির সঙ্গে তুলনা করেছে তারা। এক্ষেত্রে সুদ প্রদানের অর্থ বাইরে রেখে, অন্যান্য খরচের সঙ্গে আয়ের তুলনা করা হয়েছে। ফর্মুলাটা হল—এই হার যদি ঋণাত্মক হয় তাহলে বুঝতে হবে, আয়ের তুলনায় অন্যান্য খরচের পরিমাণ অনেক বেশি। অর্থাৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোটেই সুবিধের নয়। এই পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান কোথায়? দেখা যাচ্ছে, ভারতের এই হার (-)২.৩ শতাংশ। ভারতের থেকে পরিস্থিতি অনেক ভালো রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো ও আর্জেন্তিনার। সমগোত্রীয় অর্থনীতির দেশের মধ্যে ভারতের থেকে খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে শুধুমাত্র তুরস্ক এবং সৌদি আরব। 

এবার আসা যাক সুদের হিসেবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, শুধু সুদ মেটাতে সরকারি আয়ের ২৪.৩ শতাংশ খরচ হয়ে যায়। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয়ে সুদ দিতে বেরিয়ে যায় ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। সুদের বোঝা বইবার ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে খারাপ অবস্থা কোন দেশের? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, সমগোত্রীয় অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে আমাদের দেশের অবস্থাই সবচেয়ে খারাপ। এমনকী ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া বা আর্জেন্তিনার মতো তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা দেশগুলির পরিস্থিতিও ঢের ভালো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্বিক জিডিপি কত বাড়ল, তা দিয়ে কোনও দেশের আর্থিক অবস্থা সঠিকভাবে বোঝা যায় না। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি বা ঋণের বোঝা কতটা কম, সেসবই প্রকৃত অর্থনীতির আসল চেহারাটা সামনে আনে। ভারতের মতো বড় দেশে জিডিপি বাড়বে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার নিরিখে সেই জিডিপি যথাযথ কি? ‘নতুন ভারত’ যে এখানে পিছিয়ে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...