নয়াদিল্লি: করোনা মহামারির কারণে ট্রেনে ‘অযথা’ যাতায়াত বন্ধ করতে ২০২০ সালের মার্চ মাসে টিকিটে প্রবীণ নাগরিকদের ছাড় (কনসেশন) বন্ধ করেছিল রেল বোর্ড। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়ার পরেও গত সাড়ে পাঁচ বছরে ট্রেনের টিকিটে প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় আর চালু হয়নি। প্রবীণ যাত্রীদের পুরো ভাড়া দিয়ে টিকিট কেটেই ট্রেনে চাপতে হয়। তা নিয়ে অভিযোগও রয়েছে বিস্তর। এই ব্যাপারে রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনও আশু পদক্ষেপ করা হবে, এমন সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। এই ক্ষোভ-অসন্তোষের মধ্যেই প্রবীণ রেল যাত্রীদের কার্যত ‘সান্ত্বনা পুরস্কার’ দিতে উদ্যোগী হয়েছে রেল বোর্ড। জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন শহর ও শহরতলির লোকাল ট্রেনের একটি কোচ এবার থেকে শুধুমাত্র প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত করার পরিকল্পনা রয়েছে রেলমন্ত্রকের। ইতিমধ্যে মুম্বইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালুও হয়েছে এই ব্যবস্থা। তালিকায় রয়েছে এ রাজ্যও।
রেল সূত্রে খবর, ধাপে ধাপে প্রত্যেক জোনের লোকাল ট্রেনেই এহেন বন্দোবস্ত শুরু করার পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেইমতো স্থানীয় চাহিদা মেনে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হতে পারে কলকাতা শহর ও শহরতলির লোকাল ট্রেনেও। এই ব্যাপারে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত ‘বর্তমান’কে জানিয়েছেন, এটি একটি সদর্থক ভাবনা। স্থানীয় চাহিদা মেনে সময় ও সুযোগমতো এখানেও এই ব্যবস্থা কার্যকর করা যেতেই পারে।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস থেকে দমভিলি পর্যন্ত ইএমইউ লোকালের একটি কোচ পরীক্ষামূলকভাবে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। তাতে সাড়াও মিলছে যথেষ্ট। মুখোমুখি তিনটি এবং দু’টি সিটের কম্বিনেশনে কোচ সাজানো হয়েছে। ওই ইএমইউ লোকাল ট্রেনের ষষ্ঠ কোচে এহেন বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রবীণ রেল যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে স্পেশাল হ্যান্ডরেল এবং ট্রেনে ওঠার সহজ ধাপের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
রেলমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেনের কামরায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কোচ রয়েছে। এমনকী মহিলাদের কথা মাথায় রেখে আলাদা লোকাল ট্রেনও নির্দিষ্ট সময় মেনে চালানো হয়। কিন্তু প্রবীণ রেল যাত্রীদের জন্য এমন কোনও ব্যবস্থা লোকাল ট্রেনে নেই। কামরার মধ্যে তাঁদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষিত থাকলেও মাত্রাছাড়া ভিড়ের সময় ট্রেনে চড়তেই প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হন প্রবীণরা। এই পরিস্থিতিতে একটি পুরো কোচের ব্যবস্থা করা হলে প্রবীণ যাত্রীরা উপকৃত হবেন। রেল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, যেসব শহরে লোকাল ট্রেনই যাতায়াতের অন্যতম প্রধান ‘লাইফলাইন’, এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সেগুলিকেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন