পাওনাদারের চাপে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী শিক্ষক - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

পাওনাদারের চাপে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী শিক্ষক



রামপুরহাট: সুদের কারবারির কাছ থেকে নয় লক্ষ টাকা নিয়ে বন্ধুকে ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই বন্ধু তাঁকে ঠিকমতো সেই টাকা পরিশোধ করছিল না। এদিকে সুদের কারবারি পাওনা টাকা চেয়ে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি ফোনে হুমকি দিতে শুরু করে। অবশেষে পাওনাদারের অপমানের জেরেই চরম পদক্ষেপ করলেন মাড়গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। শনিবার রাতে বাড়ি থেকে উদ্ধার হল তাঁর ঝুলন্ত দেহ। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। যদিও পরিবারের দাবি, এই আত্মহত্যার জন্য ওই বন্ধুই যে দায়ী তার একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধর নাম সবুর আলি(৬২)। বাড়ি মাড়গ্রামের জোঘার গ্রামে। এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, মানুষের অভাব-অসুবিধেতে যেই ‘মাস্টারের’ কাছে গিয়েছে তাঁকে খালি হাতে ঘুরতে হয়নি। শনিবার রাতে পরিবারের সদস্যরা দেখেন বাড়ির মধ্যেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন ওই বৃদ্ধ। তড়িঘড়ি তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

মৃতের ভাই এহিয়া মণ্ডল বলেন, দেড় বছর আগে দাদা সুদের কারবারির কাছ থেকে নয় লক্ষ টাকা নিয়ে মাড়গ্রামের দিঘুলি গ্রামের তাঁর এক বন্ধুকে দিয়েছিলেন। এছাড়া অনলাইনেও কয়েকবার নিজের টাকা থেকে ওই বন্ধুকে ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই বন্ধু দাদাকে ঠিকমতো টাকা পরিশোধ করছিলেন না।  এদিকে পাওনাদার দাদাকে সুদ এবং আসলের টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকে। সম্মান রক্ষার্থে দাদা নিজের জমানো থেকে কিছু টাকা শোধ করেন। এরপরও সুদ বাকি পড়ে যায় প্রায় তিন লক্ষ টাকা। দাদা ওই বন্ধুকে বললে সে দিচ্ছি দেব বলে নানাভাবে আশ্বস্ত করে দাদাকে ঘোরাতে থাকে। এমনকি ফোন করলে ধরত না। 

শনিবার ওই সুদ কারবারি দাদাকে ফোন করে ব্যাপক অপমান ও হুমকি দেয়। বলে, তুই যদি আত্মহত্যাও করিস, তাহলেও তোর ছেলেকে রামপুরহাটে তুলে এনে মারধর করে টাকা আদায় করব। সেই কথাবার্তা রেকর্ডও করা আছে। অন্যদিকে একটি সুইসাইড নোট দাদার ঘর থেকে পাওয়া গিয়েছে। তাতে ওই বন্ধুর নাম উল্লেখ করে লেখা রয়েছে, আমি ধার করে হলেও তোকে টাকা দিয়েছি। সুদের তিন লক্ষের মধ্যে কিছু টাকা দিলে একটু সুরাহা হতো। এই টেনশনে যদি আমার মৃত্যু হয় তার জন্য দায়ী থাকবি তুই। এহিয়া সাহেব বলেন, এই মৃত্যুর জন্য ওই বন্ধুই দায়ী। দাদার শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পরই কল রেকর্ড, সুইসাইড নোট সহ থানায় অভিযোগ জানাব। যদিও ওই বন্ধুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, সবুরের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। আমি টাকা নিয়ে কী করব? আমার দুই ছেলে চাকরি করে। আমি প্রোমোটারি করি। ওই সুইসাইড নোট সাজানো হতে পারে। যদিও পুলিস জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা না পড়ায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। 

এলাকার বাসিন্দারা বলেন, কারবারিরা নানাভাবে মানুষকে জড়িয়ে ফেলছে উচ্চহারে সুদের ফাঁদে। অনেকে সুদের টাকা দিতে না পেরে পাওনাদের চাপে বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন। কেউ আবার চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। টাকা গ্রহীতাদের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ফাঁকা চেকে তাঁদের স্বাক্ষর করে নিচ্ছে। সময়মতো টাকা দিতে না পারলে বিভিন্ন কৌশলে সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...