বালুরঘাট: প্রথম সেমেস্টারের রেজাল্ট বেরিয়েছে। অনেকেই এক, দু’টি বিষয়ে ফেল করেছেন। কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্মীর পরিচয় দিয়ে রিভিউয়ের মাধ্যমে নম্বর বাড়িয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে তাঁদেরকে ফোন সাইবার প্রতারকদের। ইতিমধ্যেই বেশকিছু ছাত্রী ওই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছেন। ছ’শো থেকে হাজার টাকা দিয়েছেন কয়েকজন। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয়ে।
কলেজ সূত্রে খবর, বেছে বেছে আর্টস গ্রুপের ফেল করা ছাত্রীদের সাইবার প্রতারকরা ফোন করেছে। তাঁদের তালিকা সহ ফোন নম্বর কীভাবে প্রতারকদের হাতে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন ছাত্রী বালুরঘাটে সাইবার থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।
বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বিমান চক্রবর্তী বলেন, আমার কাছে অনেকেই এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে। প্রত্যেককেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি। কলেজের তরফে একাধিকবার সাইবার প্রতারণা নিয়ে কর্মশালা হয়েছে। তারপরও ভুল করে ফেলছে ছাত্রীরা। যারা ফেল করেছে, তাদেরই ফোন করা হয়েছে। কলেজ থেকে তথ্য বাইরে যাওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
বংশীহারি ব্লকের ছাত্রী মাইনো হাঁসদা বলেন, কলেজের কর্মী পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। আমার তিনটি বিষয়ে নম্বর কম এসেছে। ওই ফোনে বলা হয়েছিল রিভিউয়ের মাধ্যমে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাই প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য দু’শো করে মোট ছ’শো টাকা দিয়েছিলাম। পরে জানতে পারলাম প্রতারিত হয়েছি। এনিয়ে কলেজ ও থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।
এদিকে অনেকে আবার বিষয়টি বুঝতে পেরে ফাঁদে পা দেওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছেন। এমনই এক ছাত্রী কনিকা রায় বলেন, প্রথমে কলেজের কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিল। বিশ্বাসও করেছিলাম। পরে ফোন না ধরায় বহুবার কল করেছিল। তখনই সন্দেহ হওয়ায় টাকা দিইনি।
কলেজ সূত্রে খবর, বাংলা, ইতিহাস, এডুকেশন সহ কলা বিভাগের অন্য বিষয়ের ছাত্রীদের টার্গেট করা হয়েছিল। নির্ধারিত মার্কসের থেকে অনেক ছাত্রীই কম নম্বর পেয়েছেন। ১১ জুন প্রথম সেমেস্টারের ফলপ্রকাশ হয়। ২৬ জুন রিভিউয়ের শেষ তারিখ ছিল। এরপরই প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়েছিল। প্রতারকরা ফোন করার পর হোয়াটস অ্যাপে গৌড়বঙ্গ ইউনিভার্সিটির নাম লিখেও অনেককে মেসেজ করেছে। কলেজের দাবি, অন্তত ৫০ জন ছাত্রীকে কল করেছে সাইবার প্রতারকরা।
ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন