গঙ্গারামপুর: দীর্ঘদিনের প্রেম। একটু গুছিয়ে নিয়ে হয়তো বিয়ের পরিকল্পনা ছিল প্রেমিকের। আচমকা প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। চার হাত আর এক হবে না! তড়িঘড়ি ছুটে আসেন কলকাতায় বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত প্রেমিক। হয়তো বিচ্ছেদ নিশ্চিত বুঝতে পেরে প্রেমিকার সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে কুশমণ্ডির মান্দাহার শালবাগানে আত্মঘাতী হলেন উত্তর দিনাজপুরের প্রেমিক যুগল। পুলিস জানিয়েছে, মৃত যুবতীর নাম জয়শ্রী রায় (১৯), বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ডালিমগাঁও এলাকায়। মৃত যুবক অমিত রায় (২০) কালিয়াগঞ্জের মহেশপুরের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার সকালে কুশমণ্ডির মান্দাহার শালবাগানে একটি গাছে দু’জনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড় জমতে শুরু করে। স্থানীয়রা দেখতে পান ঘটনাস্থলে সিঁদুর পড়ে রয়েছে। সেখানেই মালাবদল করে তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন। স্থানীয়দের অনুমান, ভোররাতে তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন। খবর পেয়ে কুশমণ্ডি থানার পুলিস মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। প্রেমিক যুগল একটি বাইকে করে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। সেটি থানায় নিয়ে যায় পুলিস। বাইকের সূত্র ধরেই মৃত যুবক ও যুবতীর নাম, পরিচয় মেলে।
দুই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে জয়শ্রীর বিয়ে ঠিক হয় রায়গঞ্জের এক যুবকের সঙ্গে। আশীর্বাদও হয়ে গিয়েছে। জয়শ্রী এবার কালিয়াগঞ্জ কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন। এদিকে প্রেমিক অমিত কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বিয়ের খবর পেয়ে তিনি প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এদিকে, বুধবার বিকেল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন প্রেমিকা। আবার এদিনই কলকাতায় ফেরার কথা ছিল অমিতের। যুবতীর পরিবার কালিয়াগঞ্জ থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে। তার বান্ধবীর সূত্র ধরেই কালিয়াগঞ্জের মহেশপুরের যুবকের সঙ্গে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক রয়েছে বলে জানতে পারে পরিবার। যদিও যুবকের পরিবারের অভিযোগ, সম্পর্কের বিষয়ে সবটাই জানত মেয়ের পরিবার। অমিতের সঙ্গে বিয়ে দেবে না বলেই অন্যত্র ঠিক করে।
যুবতীর আত্মীয় তারিণী দেবশর্মা বলেন, আমাদের মেয়ে বুধবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল। সে বাইরে ঘুরতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। মেয়ের বিয়ের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গিয়েছে। তখনও কারও সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে জানায়নি। মেয়ের এক বান্ধবীর কাছে জানতে পেরে ছেলের বাড়িতে ফোন করে খোঁজ করি। এদিন সকালে আত্মহত্যার ঘটনা কুশমণ্ডি থেকে জানতে পেরেছি।
মৃত যুবকের কাকিমা জয়ী রায়ের কথায়, আমাদের ছেলে কলকাতায় কাজ করত। বুধবার বাইক নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছিল। তারপর রাতে বাড়িতে পুলিস এসে জানায় প্রেমঘটিত কারণে এক যুবতীকে নিয়ে পালিয়েছে। মেয়ের পরিবার সব জানত। আমাদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেবে না বলেই অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন