বর্ধমান: পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে জালনোট আসা নতুন কোনও বিষয় নয়। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের কয়েকটি এলাকায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের গোয়েন্দারা ওত পেতে রয়েছে। বিপুল পরিমাণ জালনোট সহ বহু কারবারি গ্রেপ্তারও হয়েছে। কিন্তু, সম্প্রতি গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, শুধু পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়, এদেশেও নকল নোট তৈরি হয়েছে। তবে সেগুলির গুণমান পাকিস্তানের নোটের মতো ভালো নয়। আধুনিক জেরক্স মেশিনে উন্নতমানের কাগজ দিয়ে এধরনের নকল নোট তৈরি করা হচ্ছে। সচেতন লোকজনদের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা নেই। তাঁরা হাতে নিয়েই নকল নোট বুঝতে পারবেন। কিন্তু, যাঁরা নোট নিয়ে সচেতন নন, তাঁরা খুব সহজেই বোকা হয়ে যাবেন। বিশেষ করে সব্জি বাজার বা ছোট মুদির দোকানগুলিতে এধরনের নোট চালানোর টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দিনমজুর বা শ্রমিকদের দিয়েও এই নোট ব্যবহার করা হতে পারে। চক্রটি ৫০ থেকে ৫০০ টাকার নোট নকল করছে।
গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এধরনের নকল নোট আধিকারিকদের হাতে এসেছে। তারপরই তারা চক্রটির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। আগেও জেরক্স করে নোট তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তিন বছর আগে বর্ধমানের খাগড়াগড় এলাকায় পুলিস এরকম একটি চক্রের হদিশ পায়। তারা ঘরের মধ্যে ১০০ এবং ৫০০ টাকার নোট ছাপাত। সেগুলি দিয়ে ছোট দোকান বা বাজার থেকে তারা সব্জি কিনত। তবে তাদের কারবার বেশিদিন চলেনি। এক ফুচকা বিক্রেতার সন্দেহ হওয়ায় তিনি বর্ধমান থানায় বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এরপরই তাকে পাকড়াও করা হয়। তবে এখন প্রতারকরা আরও উন্নতমানের কাগজ ব্যবহার করছে। জেরক্স মেশিনটিও আধুনিক। আগের থেকে নকল নোটের মান অনেক উন্নত। এক আধিকারিক বলেন, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের মতো জালনোট এদেশে তৈরি হয় না। সেদেশের কারবারিরা আসল নোটের অধিকাংশ বৈশিষ্ট্য নকল করে দেয়। সাধারণত দু’টি বৈশিষ্ট্য তারা নকল করতে পারে না। এধরনের নোট অনেক ব্যাঙ্ক আধিকারিকও হাতে নিয়ে ঘাবড়ে যান। কিন্তু, জেরক্স করা নোট আসলের মতো হুবহু হয় না। বিশেষ করে কাগজের মানে বিস্তর ফারাক থাকে। ঝাড়খণ্ড, বিহারের এই চক্র ব্যাপকভাবে সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া এরাজ্যেও কয়েকটি জেলায় চক্রটি কাজ করছে। এই কারবার বন্ধ করার জন্য জেলার পুলিস কর্তারাও সতর্ক রয়েছেন। পাশাপাশি বর্ষার সময় বাংলাদেশ থেকে জালনোট ঢোকানোর প্রবণতা বাড়ে। এই সময় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে পাটগাছ বড় হয়ে যায়। সেই সুযোগ পাচারকারীরা কাজে লাগায়। এছাড়া নদীপথ ব্যবহার করেও জালনোট ঢোকানো হয়। মালদহ জেলার কয়েকটি এলাকা পাচারকারীদের কাছে স্বর্গ রাজ্য। ওই এলাকায় নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন