কাঁথি: দীঘার রতনপুর গ্রামের সিরিয়াল কিলার আনসারুল শাহ ওরফে কালাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে নতুন রহস্যের সন্ধান পেল রামনগর থানার পুলিস। কালার নেতৃত্বে গত আট মাসের মধ্যে দু’টি নৃশংস খুন হয়। ২০২৩সালে ওড়িশার এক মহিলাকেও গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনাও সামনে এসেছে। সেই ঘটনায় কালা যুক্ত রয়েছে। আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল দীঘার রতনপুর গ্রামের শেখ রাবুল মহম্মদ ও রামনগরের দুর্গাপুর গ্রামের সুব্রত জানা ওরফে রাজু। তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ হয়েছে। শনিবার রাতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। রবিবার ধৃতদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ওড়িশার ভোগরাই এলাকার বাসিন্দা এক যুবতীর দেহ দীঘা সংলগ্ন পায়া এলাকায় পুকুর থেকে উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তবে সেইসময় তাঁর পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। ঘটনার কোনও কিনারাই হয়নি। উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে দীঘার এক যুবকের গলা কেটে খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে তাঁকে খুনের অভিযোগে কালা সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। কালাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে ২০২৪সালের অক্টোবর মাসে রামনগরের বসন্তপুর গ্রামে মুণ্ডহীন খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় ডায়মণ্ডহারবারের যুবতীর দেহ উদ্ধারের রহস্য উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় কালা যুক্ত বলে জানতে পারে পুলিস। তদন্তে নেমে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কালার দাদা ও এক নাবালককেও গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরবর্তীকালে পুলিস ২০২৩সালে পায়া এলাকায় যুবতীর দেহ উদ্ধার ও তাঁকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায়ও কালা যুক্ত রয়েছে বলে জানতে পারে। জেল হেফাজতে থাকা কালাকে আদালতের নির্দেশে গত শুক্রবার ১০দিন হেফাজতে নেয় পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদে কালা জানায়, পায়ার ঘটনাতেও সে যুক্ত রয়েছে। সে সুব্রত ও রাবুলের যুক্ত থাকার কথাও জানায়। এরপরই দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তবে ওই যুবতীদের সঙ্গে এদের পরিচয় কীভাবে হল, কোথায়, কীভাবে তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হল তা পুলিস পরিষ্কার জানতে পারেনি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কালা বিভিন্ন এলাকার অচেনা মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করত। তারপর তাঁদের ডেকে নিয়ে এসে সে ও তার সঙ্গীরা মিলে গণধর্ষণ ও খুন করত। সবকিছুই তারা ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখত। এটাই ছিল কালার নেশা।
ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) আবু নুর হোসেন ও থানার ওসি বুদ্ধদেব মাল বলেন, বিস্তারিত জানতে দু’জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন