বাঁকুড়া: গত এক বছরে বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানা প্রতারকদের খপ্পর থেকে সাড়ে ৫১লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। ওই টাকা পুলিসের তরফে প্রতারিতদের ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে। দু’দিন আগে রাইপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির খোয়া যাওয়া ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৩৫ টাকা সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস ফিরিয়ে দেয়। প্রতারিতদের তালিকায় বেসরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল, মুদি দোকানদার সহ বিভিন্ন পেশার মানুষজন রয়েছে। কীভাবে খোয়া যাওয়া এত টাকা উদ্ধার সম্ভব হয়েছে? প্রশ্নের উত্তরে সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সঞ্চার সাথী অ্যাপ ও ১৯৩০ টোল ফ্রি নম্বরের সাহায্যে প্রতারিতরা দ্রুত অভিযোগ জানানোর সুযোগ পেয়েছেন। তারপর পুলিস দ্রুততার সঙ্গে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমে পড়ে। তারফলে এই সাফল্য মিলেছে।
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, প্রতারিতদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সাইবার ক্রাইম বিভাগ তথা জেলা পুলিস নিরলসভাবে কাজ করছে। টাকা খোয়ানোর পর যত দ্রুত সম্ভব পুলিসের কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য প্রতারিতদের অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রতারকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কোনওভাবে বের হয়ে গেলে তা উদ্ধার করা মুশকিল হয়ে পড়ে। দ্রুত অভিযোগ পেলে পুলিসের পক্ষে উদ্ধারকাজ অনেকটাই সহজ হয়।
রাইপুরের বাসিন্দা তরুণকুমার মোদক বলেন, কয়েকমাস আগে সব্জি বাজার থেকে আমার স্মার্টফোন হারিয়ে যায়। ফোন ও সিমকার্ড ব্যবহার করে প্রতারকরা প্রায় তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। আমি ১৯৩০ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করি। বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানা আমার খোয়া যাওয়া টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে। পুলিসের ভূমিকায় আমি খুশি।
সাইবার ক্রাইম থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে অলনাইন প্রতারণার ঘটনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এখন আর আগের মতো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা এটিএম কার্ডের তথ্য জেনে প্রতারণা করা হয় না। পরিবর্তে প্রতারকরা নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে। বিটকয়েন, মিউচুয়াল ফান্ড, সোনা অথবা শেয়ারে লগ্নির নামে বহু মানুষকে ঠকানো হচ্ছে। মোবাইল চুরি করেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করে দেওয়া হচ্ছে। ইউপিআই লেনদেনের সময় অসতর্ক থাকলেও গাঁটের কড়ি খোয়া যেতে পারে বলে পুলিস সাবধান করছে। হোয়টসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, মেসেঞ্জারে আসা অজানা লিঙ্কে ক্লিক করলেও সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিসের তরফে বারবার সচেতন করার পরেও কেউ অতিরিক্ত মুনাফার লোভে, কেউ আবার নিছক বোকামির জন্য প্রতারকদের খপ্পরে পড়ছেন। খাতড়ার এক ব্যবসায়ী ও গঙ্গাজলঘাটির একটি বেসরকারি স্কুলে প্রিন্সিপালের খোয়া যাওয়া ৪ লক্ষ ও ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা সম্প্রতি বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস ফিরিয়ে দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন