চাকরিতে তৃণমূল কর্মী, ছাত্রনেতারা, নিজস্ব ফান্ড থেকে মাসিক বেতন - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

চাকরিতে তৃণমূল কর্মী, ছাত্রনেতারা, নিজস্ব ফান্ড থেকে মাসিক বেতন



মেদিনীপুর: কসবা-কাণ্ডের অভিঘাত! একের পর এক কলেজে খুলে যাচ্ছে ছাত্রনেতাদের ‘মৌরোসি পাট্টা’র চেহারা। সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন খড়্গপুর কলেজ। নিয়ম না মেনে অস্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগ। প্রাপকদের মধ্যে কেউ তৃণমূলের সর্বক্ষণের কর্মী, কেউ ছাত্র সংগঠনের দাপুটে নেতা, কেউ আবার স্থানীয় তৃণমূল নেতার আত্মীয়-পরিজন। সবমিলিয়ে ৩৮ জনকে নিয়োগ। তাঁদের মধ্যে ৩৬ জন এখনও কর্মরত। সবাইকে মাসিক বেতন দিতে শেষ হয়ে যাচ্ছে কলেজের নিজস্ব তহবিল। তাতে ফল যা হওয়ার তাই। ব্যাহত হচ্ছে কলেজের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ। বিষয়টি সামনে আসতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকার মানুষজন থেকে তৃণমূলের সাধারণ কর্মীদের একটা বড় অংশ। তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। কর্তৃপক্ষের অবশ্য সাফাই, দীর্ঘদিন কোনও স্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। এই অস্থায়ী কর্মীদের দিয়েই কলেজ  চালাতে হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের বর্তমান কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ একদা কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন। সেই সময় এত সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তিনি ২০১৪ সালে সভাপতি হন। ছিলেন প্রায় সাত বছর। খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বর্তমান কাউন্সিলার প্রদীপ সরকার ও তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী পরিচালন সমিতির সদস্য ছিলেন। অভিযোগ, দলের নেতাদের কাছ থেকে নামের তালিকা নিয়ে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল। সব নেতারই কোটা বাঁধা ছিল। 

কলেজের অধ্যক্ষ বিদ্যুৎ সামন্ত এদিন বলেন, ‘সেই সময় কলেজে ১৫ জন শিক্ষাকর্মী ছিলেন। নিয়োগ হয়েছিল ৩৮ জন। তাঁদের মধ্যে এখন ৩৬ জন রয়েছেন। আগেরও কয়েকজন কর্মরত। বর্তমানে এই কর্মীদের সর্বনিম্ন ১১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। কলেজের নিজস্ব  ফান্ড থেকেই এই বেতন দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই কলেজের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হয়, তার অধিকাংশটাই চলে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বাবদ।’ পাশাপাশি তিনি এটাও বলেছেন, ‘এই কর্মীদের দিয়েই তো কলেজ চলছে। আমাদের কলেজে ডি ও সি গ্রুপ মিলিয়ে ৪৬ জন শিক্ষাকর্মী থাকার কথা। এখন একজনও নেই। বারবার কর্মী চেয়েও পাওয়া যায়নি। এঁরাই কলেজের ভরসা।’ 

নির্মলবাবু বলেন, ‘সেই সময় কলেজে কর্মীর প্রয়োজন ছিল। সব নিয়ম মেনেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল।’ দেবাশিসবাবু বলেন, ‘কলেজে হাজার হাজার পড়ুয়া। কিন্তু কর্মী ছিল না। তাই কলেজ পরিচালন সমিতির মিটিংয়ে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো নিয়োগ হয়। চাকরি প্রাপকরা তৃণমূল কর্মী কি না জানি না। তবে তাঁরা সকলেই  শহরের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী। আর এটা যদি দোষের হয়, তা হলে তো বাম আমলের দিকেও আঙুল উঠবে। তখন তো লোকাল কমিটির নেতার বাড়ির লোকজন ও এসএফআই নেতাদের নিয়োগ করা হয়েছিল।’ প্রদীপবাবু বলেন, ‘সেই সময় পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মেনেই অস্থায়ী পদে নিয়োগ হয়েছিল।’ যদিও তৃণমূলেরই সাধারণ কর্মীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, এলাকায় বহু উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী রয়েছেন। তাঁদের বাদ রেখে নেতাদের কাছের লোক ও নিকট আত্মীয়দের নিয়োগ করা হয়েছিল।  প্রাক্তন ছাত্র নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সবুজ ঘোড়াই বলেন, ‘নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল কি না, যারা নিয়োগের দায়িত্বে ছিলেন তাদের প্রমাণ করার দায়িত্ব। আমরা চাই, সেই সময়ের নিয়োগের তদন্ত করা হোক।’ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...