বালুরঘাট ও কুমারগঞ্জ: বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মী নিয়োগে নেওয়া হয়েছে ঘুষ! সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চিরকুট পোস্ট করে (সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’) এহেন গুরুতর অভিযোগ করেছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তবে, যাঁর বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ, সেই কুমারগঞ্জের বিদ্যুৎ দপ্তরের সাব স্টেশন ম্যানেজার নাজিমূল হক এদিন তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, চিরকুটে যে সই করা আছে, তা জাল করা হয়েছে। সিলটিও নকল। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তাছাড়া ওই চিরকুটে যাঁকে জরিমানা করেছি বলে লেখা আছে, সেই রেকর্ড কোথাও নেই। আমাকে ফাঁসাতেই চক্রান্ত হয়েছে। দ্রুত আদালতের দ্বারস্থ হব।
বৃহস্পতিবার পোস্টে সুকান্ত দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন মিয়াঁর সুপারিশেই ৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। চিরকুটটি মফিজউদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে নাজিমূল হক পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চক্রান্ত করে বিজেপির এসটি মোর্চার সভাপতি সুশীল মার্ডিকে জরিমানা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন সুকান্ত।
সুকান্তর পোস্ট দেখে বিষয়টির সত্যতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ, চিরকুটে কথাগুলি লেখা হয়েছে কালো কালিতে। অথচ সই করা হয়েছে নীল কালির পেন দিয়ে। সাধারণত কেউ কিছু লিখলে সেই পেনেই সই করে থাকেন। এক্ষেত্রে কালি বদলানো নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। দ্বিতীয়ত, চিরকুট সাধারণত গোপন তথ্য আদানপ্রদানের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেখানে কেউ কেন স্ট্যাম্প ও সিল ব্যবহার করবেন?
বণ্টন কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার শুভময় সরকার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ওই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সমস্তটাই ভুয়ো বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তবে, অভিযোগটি আমরা খতিয়ে দেখব। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিদ্যুৎ দপ্তরের শীর্ষস্তর। তাঁদের বক্তব্য, নিয়োগের ক্ষমতা নেই কোনও সাব স্টেশন ম্যানেজারের। কুৎসা করার জন্যই অনুর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত এই চক্রান্ত।
চিরকুটে কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডলের নামও নেওয়া হয়েছে। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনিও। বিধায়কের সাফ বক্তব্য, এসব বিরোধীদের চক্রান্ত। আমার জীবনে যদি কোনওদিন একটা দুর্নীতির অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে সেদিনই আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।
বিতর্কে জড়ানো হয়েছে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন মিয়াঁকেও। সুকান্তর দাবি অনুযায়ী, মফিজউদ্দিনের সুপারিশ মতোই চাকরি দিয়েছেন সাব স্টেশন ম্যানেজার নাজিমূল হক। এপ্রসঙ্গে মফিজুদ্দিন বলেন, টাকার বিনিময়ে যে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ স্টেশন ম্যানেজারের মাধ্যমে কোনও নিয়োগ হয় না। এনিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হতে চলেছি। সুকান্ত মজুমদারের পোস্ট করা বিতর্কিত সেই চিরকুট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন