জলপাইগুড়ি: পরিচালন সমিতিতে শিক্ষক প্রতিনিধির মনোনয়ন ঘিরে তুলকালাম। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন শিক্ষকরা। ঝামেলা থামাতে গিয়ে চোখে আঘাত পেয়েছেন এক শিক্ষিকা। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের এই ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে। ঘটনার খবর পৌঁছে গিয়েছে জেলাশাসকের পাশাপাশি রাজ্য শিক্ষা দপ্তরেও। শুরু হয়েছে তদন্ত। সোমবার ঘটনাটি ঘটলেও স্কুলের তরফে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই মঙ্গলবার এনিয়ে শুরু হয় শোরগোল। সার্ধশতবর্ষ প্রাচীন স্কুলে ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা নিয়ে শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলার শিক্ষামহল।
প্রধান শিক্ষক ধর্মচাঁদ বাড়ুই বলেন, ম্যানেজিং কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি কারা থাকবেন, তা নিয়ে সোমবার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠক চলাকালীন কিছু শিক্ষকের সই করা কাগজে আচমকা দু’টি নাম আসে। ওই নাম ঘিরেই তৈরি হয় মতবিরোধ। কথা কাটাকাটি চলতে থাকে। সেসময় স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা বিষয়টি থামাতে গেলে চোখে আঘাত পান।
আলোচনা চলাকালীন শিক্ষকদের একাংশ দু’জনের নাম লিখে তাঁদের ম্যানেজিং কমিটিতে রাখার জন্য কার্যত চাপ দেওয়া হয় বলে দাবি প্রধান শিক্ষকের। বিষয়টি তিনি জেলাশাসকের পাশাপাশি রাজ্য স্কুল শিক্ষাদপ্তরেও জানিয়েছেন।
২০১৮ সাল থেকে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে পরিচালন কমিটি নেই। সেকারণে ম্যানেজিং কমিটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিটিতে দু’জন শিক্ষক প্রতিনিধি থাকার কথা। স্কুলে ৩৫ জন শিক্ষকের মধ্যে কারা থাকবেন, তা ঠিক করতেই বৈঠক ডাকেন প্রধান শিক্ষক। আঘাতপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বলেন, বৈঠক চলাকালীন শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি। তখনই আমার চোখে আঘাত পাই। কে বা কারা আমাকে আঘাত করেছেন, তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। স্কুলে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়েছি। বিষয়টি শিক্ষাদপ্তরেও জানাব।
যদিও শিক্ষকদের একাংশের দাবি, হাতাহাতির কোনও ঘটনা ঘটেনি। কথা কাটাকাটি চলাকালীন কোনওভাবে ওই শিক্ষিকা আঘাত পান।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি নিরুপম মুস্তাফি বলেন, আমরা মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে যাই। শতবর্ষ প্রাচীন স্কুলে এ ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয়, সেটা প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ম্যানেজিং কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি রাখার বৈঠকে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। আক্রান্ত শিক্ষিকার সঙ্গেও কথা বলেছি আমরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন