মুম্বই: বৃদ্ধ বাবার দেখাশোনা করতে কাজ থেকে অবসর নিয়ে পাকাপাকিভাবে বাড়িতে ফিরবেন বলেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে পোয়াইয়ের জলবায়ু বিহারের বাড়িতে ফিরলেন তিনি। তবে সশরীরে নয়, অভিশপ্ত এআই ১৭১ বিমানের পাইলট সুমিত সাভারওয়ালে ফিরলেন কফিনবন্দি হয়ে। বাড়ির উঠোনের মাঝখানে তাঁর কফিন ঘিরে আত্মীয় পরিজন-পড়শি-বন্ধুদের ভিড়।
এরইমধ্যে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে আসেন এক অশীতিপর বৃদ্ধ। একজন তাঁকে ধরে নিয়ে গেলেন কফিনের সামনে। অনেক কষ্টে কান্না চেপে হাতজোড় করলেন তিনি। তারপর আর নিজেকে চেপে রাখতে পারলেন না পুষ্করাজ সাভারওয়াল। ছেলের কফিনের উপর কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। একই ধরনের মর্মস্পর্শী ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজস্থানের জয়পুরও। সেখানে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) রাজবীর সিংকে চিরবিদায় জানালেন তাঁর স্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল দীপিকা চৌহান। সেনার উর্দি পরেই স্বামীকে চোখের জলে শেষবিদায় জানালেন দীপিকা।
বৃহস্পতিবার আমেদাবাদ থেকে টেক অফের পরেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমান। অভিশপ্ত বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের ক্যাপ্টেন ছিলেন সুমিত। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়াত ক্যাপ্টেনের দেহ চিহ্নিত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারপরেই তা পরিবরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে মুম্বইয়ের বাড়িতে এসে পোঁছায় সুমিতের কফিনবন্দি দেহ। এরপর চাকালা শ্মশানের তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
সুমিত আর নেই, এটা যেন ঘনিষ্ঠদের কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। এক প্রাক্তন সহকর্মীর কথায়, ‘সুমিতের সঙ্গে কয়েক দশক একসঙ্গে কাজ করেছি। অত্যন্ত দক্ষ পাইলট ছিল। খুব শান্ত আর নম্র।’ প্রয়াত পাইলটের এক বন্ধু বলেন, ‘একজন ভালো মানুষকে হারালাম।’ প্রতিবেশীদের গলাতেও আক্ষেপের সুর। একজন বলেন, ‘সুমিতের সঙ্গে খুব একটা কথা হতো না। আমি নিশ্চিত যে প্রত্যেকের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন। এমন পরিণতি মেনে নেওয়া যায় না।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন