নয়াদিল্লি: কী কারণে আমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা? পাখির ধাক্কা? পাইলটের ভুল না কি ইঞ্জিনে গন্ডগোল? নানা মহলে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। হবে নাই বা কেন? সাম্প্রতিককালে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর মৃত্যুমিছিলের সাক্ষী হয়নি দেশ। তবে বোয়িং ড্রিমলাইনারের সুরক্ষা পদ্ধতি নিয়ে অতীতেও প্রশ্ন উঠেছিল। চোখে আঙুল দিয়ে সেই ত্রুটি দেখিয়ে দিয়েছিলেন বোয়িংয়ের কোয়ালিটি ম্যানেজার তথা হুইসেল ব্লোয়ার জন বার্নেট। শোনা যায়, এর জেরেই তাঁকে প্রাণ হারাতে হয়।
ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা বার্নেট কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ক্যাবচালক হিসেবে। পরে আমেরিকায় বায়ুসেনায় যোগ দেন । ১৯৮৮ সালে বোয়িংয়ের কোয়ালিটি ইনসপেক্টর হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সাল। বোয়িংয়ের নর্থ চার্লস্টন প্লান্টে ড্রিমলাইনার প্রজেক্টে কাজ করার সময় ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পান। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিমান তৈরির সময় সুরক্ষা ব্যবস্থায় গাফিলতি করা হচ্ছে। আসলে উৎপাদনের গতি বাড়াতে ভুলত্রুটি এড়িয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছিল কর্মীদের। বিমানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তারের সঙ্গে কিছু ধাতব অংশ আটকে গিয়েছিল। অক্সিজেন সরাবরাহের জায়গাতেও ত্রুটি ছিল। কিন্তু ওগুলোয় কেউ নজর দেয়নি। এমনকী দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু যন্ত্রাংশও ঠিক করে লাগানো হয়নি।
এনিয়ে আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেল্থ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেও লিখিত অভিযোগ জানান বার্নেট। প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু হলেও পরের দিকে রহস্যজনকভাবে বোয়িংয়ের পক্ষে কথা বলতে শুরু করে অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেল্থ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সংস্থার চাপে বার্নেটকে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালে এনিয়ে জনসমক্ষে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। ২০২২ সালে নেটফ্লিক্সের একটি তথ্যচিত্রেও বিষয়টি সামনে আসে। ২০২৪ সালের ৯ মার্চ। বার্নেট সমস্ত প্রমাণ সহ আদালতে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে গিয়েছিলেন। সেইসময় চার্লসটনের একটি হোটেলের বাইরে তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিস বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে। আদৌ আত্মহত্যা না কি খুন, তা নিয়ে আজও সংশয় রয়ে গিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন