
তমলুক: শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই-গঠরা সমবায় সমিতিতে ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা তছরুপের ঘটনায় অভিযুক্ত ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। ধৃতের নাম অশোককুমার সামন্ত। বাড়ি শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের উত্তর মির্জাপুর গ্রামে। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তমলুক থানার পুলিস। শনিবার ধৃতকে তমলুক সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, গত মার্চ মাসে ওই সমবায় সমিতির সম্পাদক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এফআইআর করেছিলেন। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ খারুই-গঠরা সমবায় সমিতির
সম্পাদক অভয়কুমার খাঁড়া ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন। অভিযোগ,
সমিতির ফিক্সড ডিপোজিট থেকে লোন, টার্ম ডিপোজিট, সেভিংস অ্যাকাউন্ট,
কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং সমিতির সুদের সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অডিটে
ওই তছরুপের ঘটনা সামনে আসতেই হইচই পড়ে যায়। অভিযুক্তের থেকে টাকা ফেরানোর
জন্য চাপ বাড়ানো হয়। অভিযুক্ত ম্যানেজার নিজের ও মায়ের নামে থাকা জমি,
শ্যালকের নামে থাকা দোতলা বাড়ি এবং নগদ মিলিয়ে দু’কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা সমবায়ে
ফেরত দেয়। বাকি সাত কোটি ৪৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা ফেরানো নিয়ে নিশ্চুপ।
সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটি বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য লাগাতার চেষ্টা করেও
ব্যর্থ হওয়ায় থানায় এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৮ সাল থেকে খারুই-গঠরা
সমবায় সমিতির বোর্ড ছিল না। দু’টি টার্মে দু’জন কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট
অফিসার ‘স্পেশাল অফিসার’ হিসেবে ওই সমিতির দায়িত্বে ছিলেন।
সমিতির সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপক কর্মী হিসেবে অশোককুমার সামন্ত আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অপারেটার হিসেবে কাজ করত। ওই দায়িত্বে থাকাকালীন সে ব্যাপক দুর্নীতি করে বলে অভিযোগ। সমিতিতে আমানতকারীদের গচ্ছিত ফিক্সড ডিপোজিটের মতো হুবহু নকল সার্টিফিকেট বানানো হয়। নকলগুলি সমবায় অফিসে রেখে, আসল সার্টিফিকেটগুলি মেচেদার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা করে কয়েক কোটি টাকা তোলা হয়। মেচেদার ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কটির কর্মীদের ভূমিকাও তদন্ত সাপেক্ষ। কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ইন্সপেকশন টিম সমবায়ের কারচুপির ধরন দেখে চমকে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন