
নয়াদিল্লি: ভারতের লড়াই জঙ্গিদের সঙ্গে, পাকিস্তানি সেনার সঙ্গে নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পাক সেনা জঙ্গিদের পক্ষ নিয়েছে। সোমবার ফের একবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল ভারতীয় সেনা। এদিন তিন বাহিনী একযোগে জানিয়েছে, জঙ্গিদের পাশে দাঁড়িয়ে পাক সেনা ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে, তাই তার জবাব দেওয়া জরুরি ছিল। পাকিস্তানের যা কিছু ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। সংঘাতে জড়িয়ে পাকিস্তানের কী কী ক্ষতি হয়েছে, ফের একবার তার খতিয়ানও দিল ভারতীয় বাহিনী।
রবিবারের পর সোমবার ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিন বাহিনীর
কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)
লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই, এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে ভারতী, ভাইস
অ্যাডমিরাল এ এন প্রমোদ। এদিন তাঁরা জানিয়েছেন, অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন
ভারতের প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের একটি মিরাজ ফাইটার জেট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
ভেঙে পড়া পাক যুদ্ধবিমানের ভিডিও প্রকাশ করে দাবির সপক্ষে প্রমাণও পেশ
করেছে সেনা। রবিবারও ভারত জানিয়েছিল, পাকিস্তানের একাধিক আধুনিক যুদ্ধ
বিমান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাক বায়ুসেনাও কার্যত সেকথা মেনে নিয়েছে।
যদিও তাদের দাবি, একটি যুদ্ধবিমানের ‘সামান্য’ ক্ষতি হয়েছে।
এদিন ভারতের
প্রত্যাঘাত প্রসঙ্গে বিরাট কোহলি ও অ্যাসেজ সিরিজের প্রসঙ্গ টেনে আনেন
ডিজিএমও। তিনি জানান, বিরাট তাঁরও প্রিয় ক্রিকেটার। সাতের দশকের
অস্ট্রেলিয়ার দুই ফাস্ট বোলার জেফ টমসন আর ডেনিস লিলির মতো ভারতের সুরক্ষা
ব্যবস্থাও একইভাবে বহু স্তরে কাজ করছে। ভারতের প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের কোন
কোন সেনাঘাঁটির ক্ষতি হয়েছে, এদিন তারও ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভারতের
আক্রমণে রাওয়ালপিন্ডির কাছে নুর খান এয়ারবেসে বিরাট বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া
পাক-পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খান এয়ারবেসের রানওয়েতে বিরাট গর্ত তৈরি হয়েছে।
রবিবারও সেনা জানিয়েছিল, করাচির কাছে মালির ক্যান্টনমেন্টও ব্যাপক ক্ষতির
মুখে পড়েছে। এদিন এয়ার ভাইস মার্শাল জানান, পাকিস্তানের হামলা মোকাবিলা
করার জন্য ভারতের নিজস্ব এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ‘আকাশ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করেছে। এই ব্যবস্থা কঠিন পরীক্ষায় সফল হয়েছে। পাকিস্তান যে চীনা
অস্ত্রের উপর ভরসা করে ভারতে হামলা চালাচ্ছে, তার প্রমাণ আগেই মিলেছিল।
এদিন সেনার তরফেও বলা হয়, পাকিস্তানের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ
উদ্ধার হয়েছে। যেটি চীনে তৈরি পিএল-১৫ মিসাইল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা
হচ্ছে।
পাকিস্তানে প্রত্যাঘাতে ভারতীয় নৌবাহিনী সরাসরি যোগ না দিলেও পাক
নৌসেনার উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টির কথা রবিবারই জানা গিয়েছিল। এদিন ভাইস
অ্যাডমিরাল জানিয়েছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডের কয়েকশো কিমি আগেও যাতে পাকিস্তানের
কোনও বিমান আসতে না পারে, তার দিকে কড়া নজর রেখেছিল নৌসেনা। পাক হামলা
মোকাবিলার জন্য বিরাট সংখ্যায় মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান সঙ্গে নিয়ে আরব সাগরে
টহল দিচ্ছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। সঙ্গে ছিল আর্লি ওয়ার্নিং হেলিকপ্টার। এর
সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির রেডারের সাহায্যে কার্যত একটি সুরক্ষা বলয় তৈরি করা
হয়। সংঘাত চলাকালীন নৌসেনা ও বায়ুসেনা সমন্বয় বজায় রেখে চলেছে। ফলে
আকাশপথে হামলা সহজেই ঠেকিয়ে দেওয়া গিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন