
আসানসোল: জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে চান। তাই দীঘার উদ্দেশে পাড়ি দিলেন দুর্গাপুরের স্বপনকুমার ঘোষ। সঙ্গী তাঁর ৩৪ বছরের পুরনো সাইকেল। তা নিয়েই তপ্ত আবহাওয়ায় ২৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছবেন দীঘায়। যাওয়ার পথে এই মন্দির তৈরির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে যেমন প্রচার করবেন, তেমনই দেবেন সম্প্রীতির বার্তা। শনিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ঘটা করে স্বপনবাবুর যাত্রার সূচনা করেন। এদিন থেকেই কার্যত দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উচ্ছ্বাসের আঁচ এসে পড়ল শিল্পাঞ্চলে। তৃণমূলের উদ্যোগেও জেলাজুড়ে এনিয়ে চলবে মেগা প্রচার। হাজার হাজার মানুষকে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের সরাসরি সম্প্রচার দেখাতে উদ্যোগী শাসক শিবির। ব্যবস্থা করা হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। জেলার বিভিন্ন জগন্নাথ মন্দিরে সেদিন হবে যজ্ঞও।
এদিন স্বপনবাবুর যাত্রার সূচনা হয় অরবিন্দ থানার কাছে তৃণমূল
কার্যালয় থেকে। সকাল থেকেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সেখানে ভিড় করেন। তাঁরা
স্বপনবাবুকে উৎসাহ জোগান। সকাল ৯টা নাগাদ যাত্রার সূচনা করেন জেলা তৃণমূল
সভাপতি নরেন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, দীঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরির জন্য
মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সম্প্রীতির বার্তা দিতে দিতে যাবেন
স্বপনবাবু। এদিন থেকেই আমাদের কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই মহতী পদক্ষেপ
মানুষের কাছে তুলে ধরবেন। অটো, টোটোয় মাইক বসিয়ে এ নিয়ে আমরা প্রচার
করব। প্রতিটি অঞ্চলে ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে দীঘার
জগন্নাথ মন্দির সরাসরি দেখার সুযোগ করে দেওয়া হবে। জেলাবাসী এ নিয়ে
উৎসাহিত রয়েছেন।
স্বপনবাবু পেশায় রংমিস্ত্রি। তাঁর আদি বাড়ি নদীয়ার
করিমপুরে। তবে বর্তমানে তিনি দুর্গাপুরে থাকেন। এখানে আসার পর তিনি চরম
আর্থিক অনটনে পড়েন। বাসভাড়া বাঁচাতে দুর্গাপুর থেকে সাইকেলে করিমপুরের
পুরনো বাড়িতে যেতেন। তাঁর মামার বাড়ি কৃষ্ণনগরে। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে তিনি
করিমপুর যেতেন। সেই থেকেই সাইকেল চালানো একপ্রকার নেশা হয়ে গিয়েছে তাঁর।
স্বচ্ছতার বার্তা নিয়ে সম্প্রতি প্রয়াগের কুম্ভমেলাতেও সাইকেল চালিয়ে
গিয়েছিলেন। এবার সম্প্রীতির বার্তাকে সামনে রেখে রওনা দিলেন দীঘা। তৃণমূল
সমর্থক স্বপনবাবু বলেন, দেশের আজ প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অটুট
রেখে বহিঃশত্রুকে উচিত শিক্ষা দেওয়া। সেই নিয়ে জনমত গঠন আমাদের লক্ষ্য।
আমাদের রাজ্যে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে মন্দির তৈরি হল, সেটিও তো
যথেষ্ট গর্বের।
এদিন কুলটিতেও তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ৩০ এপ্রিল মেগা
কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিয়ামতপুরে ভোরে নগরকীর্তন হবে। পরে
কুলটির মোহনসিং ডাঙাল থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা যাবে শিমুলগ্রামের
জগন্নাথ মন্দিরে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন