
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি: নাম— আদিল
আহমেদ ঠোকার। বাড়ি অনন্তনাগ জেলার বিজবেহারায়, গুরে গ্রামে। পহেলগাঁও
হামলায় কার্যত নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিল এই জঙ্গি। ইতিমধ্যেই আদিলের মুখের
স্কেচ প্রকাশ করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিস। খোঁজ দিলেই মিলবে ২০ লক্ষ টাকার
পুরস্কার। বিস্ফোরণে গুঁড়িয়ে গিয়েছে তার বাড়ি। সেই আদিল যে ২০১৮ সালে
পাকিস্তানে গিয়েছিল, সেই বিষয়টিও সামনে এসেছে। এবার সেব্যাপারে আরও
চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এল গোয়েন্দাদের। জানা গিয়েছে, স্টুডেন্ট ভিসাতেই
সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে যায় সে। সেখানে লস্কর-ই-তোইবার ক্যাম্পে তার সামরিক
প্রশিক্ষণ চলে। ছ’বছর পর আরও তিন-চারজন জঙ্গিকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ
করে আদিল। বড়সড় একটি অপারেশনের প্রস্তুতি চলছিল তখন থেকেই।
২০১৮ সালে
গ্রামের বাড়ি ছাড়ে আদিল। তার আগে থেকেই অবশ্য সীমান্তের ওপারে নিষিদ্ধ
জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে তার যোগাযোগ। সেই সূত্রেই ‘জেহাদি’ ভাবধারায়
অনুপ্রাণিত হয়ে পড়া। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানে যাওয়ার পর যেন
কর্পূরের মতো উধাও হয়ে যায় আদিল! এমনকী পরিবারের সঙ্গেও যোগযোগ
বিচ্ছিন্ন করে দেয়। প্রায় আট মাস কোনও খোঁজখবর পায়নি কেউ। এই সময়ই
সীমান্তের ওপারে মগজধোলাই ও সামরিক প্রশিক্ষণ চলে এই কাশ্মীরি যুবকের।
নেপথ্যে লস্কর ও জয়েশ।
পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শেষ করে তবেই ভারতে
ফেরার সুযোগ মেলে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ছ’বছর পাকিস্তানে কাটানোর
পর গত অক্টোবরে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে এপারে চলে আসে আদিল। অনুপ্রবেশের
জন্য বেছে নেয় প্রত্যন্ত পুঞ্চ-রাজৌরি সেক্টরকে। আদিল যখন এই এলাকা দিয়ে
সীমান্ত পেরয়, তখন তার সঙ্গে ছিল আরও তিন-চারজন। তাদের মধ্যেই একজন
পাকিস্তানি নাগরিক হাসিম মুসা ওরফে সুলেমান। এই পাকিস্তানি যুবক পহেলগাঁও
হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। আদিলের সাহায্যেই ভারতে ঢুকেছিল মুসা।
কাশ্মীরে
ফিরে ধরা পড়ার ভয়ে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড় ঘুরতে
থাকে আদিল। খুব অল্প সময়ের জন্য কিস্তওয়ারে তাকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ফের
গা-ঢাকা দিয়ে ত্রালের পাহাড়ি পথ বেয়ে অনন্তনাগে পৌঁছে যায় সে। গোয়েন্দারা
জানতে পেরেছেন, গোটা পর্বে আদিলের সঙ্গে ছিল এক পাকিস্তানি। কয়েক সপ্তাহ
তারা গোপন ডেরায় আত্মগোপন করে কাটায়। সেই সঙ্গেই চলছিল ঝিমিয়ে পড়া জঙ্গি
স্লিপার সেলগুলিকে ফের সক্রিয় করে তোলার কাজ। সব দিক গুছিয়ে ‘ধামাকা’র
জন্য অপেক্ষা করছিল তারা। বৈসরণ উপত্যকা আগেভাগে খুলে যাওয়ায় চলে আসে
সুযোগ। তারপরই নারকীয় হামলা!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন