কলকাতা: সুপ্রিম নির্দেশের পরেই চাকরি ফেরার আশায় চাকরিচ্যুতরা! মামলা থেকে কবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সরেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন চাকরিচ্যুতরা! কিন্তু আদৌ তাঁদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে তো? কথায় বলে হাকিম নড়লেও হুকুম নড়ে না। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলা থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরতে হলেও তাতে চাকরিচ্যুতদের কতটা লাভ হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
কিন্তু বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরানোর ফলে আশায় বুক বাঁধছেন চাকরিচ্যুতরা। যা দেখে সকলেই বলছেন অযোগ্যদের লাফালাফি শুরু হয়ে গেল। কারণ চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় তৎপরতা বাড়িয়েছেন তাঁরা। মনে করছেন এবার হয়ত হারানো চাকরি তাঁরা ফিরে পাবেন। জানা গিয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই সেটি ফিরে পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বীরভূমের বেশ কয়েকটি স্কুলে গিয়ে হারানো চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় কি পদক্ষেপ করা উচিত হবে তা বুঝতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই বীরভূমের কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা মাধ্যমিক স্তরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। যদিও সেখান থেকে কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একাধিক মামলা থেকে সরতে হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। তখনই চাকরিচ্যুতদের মনে হয়েছিল এবার হয়ত তাঁরা হারানো চাকরি ফিরে পাবেন। তাই বীরভূমের বিভিন্ন স্কুলে চাকরি খোওয়ানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের পাশাপাশি নবম-দশমের শিক্ষক-শিক্ষিকারা শনিবার স্কুলে গিয়ে নতুন করে কাজে যোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। এর মধ্যে আবার কাজে যোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আইনজীবীদের চিঠিও দিয়েছেন কেউ কেউ। উল্লেখ্য গত ফেব্রুয়ারিতে নবম-দশমের ৬১৮ জন শিক্ষকের সুপারিশপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর মার্চ মাসে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের তিনি নির্দেশ দেন। তাঁদের মধ্যে থেকে বীরভূমে ৮৮ জন চাকরি হারিয়েছিলেন। তাঁরা কেউ শিক্ষক-শিক্ষিকা, কেউ বা গ্রুপ সি বা গ্রুপ ডি পদে কর্মরত ছিলেন।
কেন তাঁদের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না এই প্রশ্ন শনিবার তাঁরা তোলেন স্কুলে গিয়ে। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্দেশ দিয়ে তাঁদের চাকরি বাতিল করেছে। তাই নতুন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্দেশ না দিলে চাকরিতে কাউকে ফেরানো যাবে না। এ ব্যাপারে স্কুল পরিদর্শকের কোনও নির্দেশ আসেনি বলেও বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন। বীরভূমের খয়রাশোলের একটি স্কুলের চাকরি হারানো গ্রুপ সি কর্মী দাবি করেন,'' সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পরেই অনেক জেলায় চাকরি হারানোরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তাই আমরাও কাজে যোগ দিতে চাইছি''। যদিও তাঁর এই দাবির কোনও সত্যতা মেলেনি। তাই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যাকে সরতে হলেও চাকরি খোয়ানোদের এত উৎসাহিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
কারণ সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তারা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। তাই নতুন বিচারপতি সেই জায়গায় আসলেও সিদ্ধান্তের বদল হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু যেভাবে অযোগ্যরা চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছেন তা দেখে বিদ্রুপ করছে রাজ্যবাসী। এই অবস্থায় তাঁদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার সম্ভাবনা যে খুবই কম তা বলাই যায়।
সোমবার, ১ মে, ২০২৩
সুপ্রিম নির্দেশের পরেই চাকরি ফেরার আশায় চাকরিচ্যুতরা!
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Loading...
About Aaj Bikel
Aaj Bikel is India leading online news site (Bengali, English) which offers the latest International and Nationwide news on Education, Jobs, current affairs, politics, entertainment, real estate, city news, health, career, lifestyle, food that enables its viewers to stay abreast with all the latest developments in Bengali and English.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন