রাজ্যের স্কুলে ক্যান্সারের টিকা বিনামূল্যে - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

রাজ্যের স্কুলে ক্যান্সারের টিকা বিনামূল্যে



কলকাতা: সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার! মহিলাদের মারণরোগ। প্রতি বছর এমন ধরনের ক্যান্সারের শিকার লক্ষ লক্ষ নারী। এহেন মারণরোগ মোকাবিলায় বেসরকারি টিকা ছিলই। কিন্তু তার দাম আকাশছোঁয়া। সাধারণ ঘরের কিশোরীরা সেই ভ্যাকসিনের নাগাল পাবেন কীভাবে? এই প্রশ্ন গত কয়েক বছর ধরেই ঘোরাফেরা করছে ওয়াকিবহাল মহলে। অবশেষে এল সুসংবাদ। পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে রীতিমতো ক্যাম্প করে দেওয়া হবে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের টিকা। এবং সেটাও একেবারে বিনামূল্যে। রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরের মাধ্যমে ছাত্রীদের দেওয়া হবে এই এইচপিভি বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন। ২০২৭ সাল থেকে শুরু হবে এই টিকাকরণ। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন রাজ্য পরিবার কল্যাণ আধিকারিক ডাঃ অসীম দাস মালাকার।

ভারতকে এই ধরনের ক্যান্সারের প্রায় রাজধানী বলা চলে। প্রতি বছর বিশ্বে যত মহিলা এই কঠিন অসুখে মারা যান, তাঁদের ২৫ শতাংশই এদেশের বাসিন্দা। ২০২৩ সালে সারা দেশে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার জন। মারা যান প্রায় ৮০ হাজার। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে স্তন বা ব্রেস্ট ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে সার্ভাইক্যাল বা জরায়ু-মুখের ক্যান্সার। এইচপিভি বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামে এক ধরনের ভাইরাস এই রোগের কারণ। প্রতিরোধ ব্যবস্থা একমাত্র স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা এবং টিকাকরণ। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় শৌচ বা বাথরুম এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এই রোগের ভ্যাকসিন বর্তমানে সরকারি সার্বিক টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় নেই। ফলে সরকারি হাসপাতাল থেকে তা পাওয়া যায় না। জরায়ু-মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি আটকাতে বেসরকারিভাবে দিতে হয় টিকা। সেই দিন এবার অতীত হতে চলেছে। রাজ্য পরিবার কল্যাণ আধিকারিক ডাঃ অসীম দাস মালাকার জানিয়েছেন, দেশজুড়েই এই টিকাকরণ শুরু করছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলায় তা শুরু হবে ২০২৭ সালে। সেজন্য প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে কেন্দ্র। তবে কোন বয়সসীমা বা কোন কোন ক্লাসের ছাত্রীরা ওই টিকা পাবে, তা এখনও স্থির হয়নি। 

সাধারণত, ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত এইচপিভি ভ্যাকসিন দেওয়া যায়। ভারতীয় এবং আমেরিকান—একাধিক ধরনের টিকা চালু আছে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ৯ থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত বয়সি মহিলাদের ভারতীয় টিকাটি দেওয়া যায়। ১৫ বছর বয়সের মধ্যে দেওয়া হলে দু’টি ডোজ এবং না হলে তিনটি ডোজ দিতে হবে। দু’টি ডোজ নিলে তার ফারাক হবে ছ’মাস। তিনটি ডোজের ক্ষেত্রে প্রথমবারের দু’মাস এবং ছ’মাস পর—এইভাবে টিকাকরণ করতে হয়। এটি চার ধরনের সাব টাইপের এইচপিভি সংক্রমণের ঝুঁকি আটকায়। দামি আমেরিকান ন্যানোভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন আটকায় ন’ধরনের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। সেটি ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত দেওয়া যায়। তবে এগুলির দাম শুনলে যে  কেউ পিছিয়ে আসবেন। ভারতীয় ভ্যাকসিনের দাম ডোজপ্রতি কমবেশি ২৬০০ টাকা। আমেরিকান টিকা ৩০০০-৩৫০০ টাকা দিয়ে শুরু। কিছুদিন আগে বাজারে আসা সবচেয়ে দামি ভ্যাকসিনটির প্রতি ডোজের মূল্য প্রায় ১০ হাজার টাকা। ফলে বিনামূল্যে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের টিকাকরণ মানুষকে অশেষ স্বস্তি  দিতে পারে।      

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ প্রণবকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এটা খুবই ভালো খবর। এখন আমরা চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে কম খরচে (১২০০ টাকা) এই টিকা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু আর্থিক কারণ এবং সচেতনতার অভাবে তা নিতে পারছেন না অসংখ্য গরিব, নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা। বিনামূল্যে টিকাকরণ শুরু হলে লক্ষ লক্ষ পরিবার মেয়েদের এই ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...