শিলিগুড়ি: দুই পাড়ার অশান্তির ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরি হয়েছিল বিজেপি পার্টি অফিসে! ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়দের একাংশ। তাঁরা এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানাবেন। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে বিজেপি নেতা অমর ভকতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। এদিকে, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকার এক বাসিন্দা। যদিও এবিষয়ে বিধায়ক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিস ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য,শহরের ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা ও মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে নেওয়া কর্মসূচি বানচাল করতেই বিজেপি নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে পুলিস। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শহরের রাজনীতি সরগরম।
শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের রেল লাইনের একদিকে বাগরাকোট, আরএকদিকে টিকিয়াপাড়া। টিকিয়াপাড়ার পাশেই রেল কলোনি। সেখানে বিজেপির ৫ নম্বর মণ্ডল অফিস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে সেই অফিসের সামনে থেকে বাঁশ, লাঠি, লোহার রড হাতে বিশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলের অধিকাংশ ছিলেন পাশের বাগরাকোটের বাসিন্দা। মাতঙ্গিনী হাজরা কলোনি, মজদুর কলোনি হয়ে মিছিল প্রবেশ করে টিকিয়াপাড়ায়। এতেই বাগরাকোট ও টিকিয়াপাড়ার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে।
বৃহস্পতিবার টিকিয়াপাড়ার কয়েকজন যুবক অভিযোগ করেন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট টিকিয়াপাড়া অংশ নেয়নি। এখানকার সঙ্গে কোনও গোলমালও হয়নি। তা সত্ত্বেও বিজেপি অফিস থেকে বের করা মিছিল বাগরাকোটে না গিয়ে টিকিয়াপাড়ার বিভিন্ন অলিগলিতে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে দুই পাড়ার মধ্যে হাঙ্গামা হয়। শান্ত দুই পাড়ার মধ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। শহরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে টিকিয়াপাড়া। স্থানীয় কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পৃক্তা দাস বলেন, পায়ের তলা থেকে রাজনৈতিক জমি আলগা হচ্ছে বিজেপির। তাই এক সপ্তহ আগের ক্রিকেট ম্যাচকে ঢাল করে পরিকল্পিত ভাবে বাগরাকোটের একাংশকে দিয়ে টিকিয়াপাড়ায় হামলা করিয়েছে ওরা। যার ব্ল-প্রিন্ট রেল কলোনির বিজেপি অফিসে তৈরি হয়েছিল। বিজেপির ৫ নম্বর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমর ভকত গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।
পাল্টা বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু সাহা বলেন, হকার্স কর্নার থেকে বাগরাকোটের যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। টিকিয়াপাড়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজ করেছে ডাঙিপাড়ার কয়েকজন দুষ্কৃতী। ওই হামলার প্রতিবাদে বিধায়ক ও বিজেপি সরব হয়েছে। এখন প্রতিবাদীদের দমন করতে তৃণমূলের নির্দেশে উঠেপড়ে লেগেছে পুলিস। বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, শহরের আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে ১২ জুলাই মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল, ২১ জুলাই আমাদের দলের উত্তরকন্যা অভিযান রয়েছে। সেই কর্মসূচিগুলি বানচাল করতেই বিজেপির কার্যকর্তাদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে পুলিস। আমাদের কার্যকর্তা অমরবাবুর গ্রেপ্তারের ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট। বুধবার টিকিয়াপাড়ায় অমরবাবুও আক্রান্ত হন। এই সেই পার্টি অফিস। - নিজস্ব চিত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন