শিলিগুড়ি: জঙ্গলের ভিতর থেকে এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার হল। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির শালুগাড়ার রাজ ফাঁপড়ির বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে। এদিন বিকেলে জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে পথচারীরা পচা গন্ধ পান। কয়েকজন যুবক কৌতূহলবশত জঙ্গলের ভিতর প্রবেশ করেন। সেখানে পচাগলা দেহ তাঁরা দেখতে পান। মানুষের দেহ পড়ে আছে দেখে তাঁরাই ভক্তিনগর থানার পুলিসকে খবর দেন। পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠায়। যদিও দেহের পাশে থাকা পোশাক দেখে এলাকারই এক চিকিৎসকের পরিবার সেটি তাঁদের পরিবারের বলে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে। তবে জঙ্গলের ভিতর ওই ব্যক্তির দেহ গেল কীভাবে তা নিয়ে রীতিমতো ধন্দে রয়েছে পুলিস। এই ঘটনার পিছনে নিছকই কোনও দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত খুন তা নিয়ে রহস্য ছড়িয়েছে। দেহ মেলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ ফাঁপড়িতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা একটি দেহ উদ্ধার করেছি। দেহটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করতে দেহটি মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শালুগাড়ার বাসিন্দা পশু চিকিৎসক লেন্দুপ ভুটিয়া (৩৩) ১২ জুলাই থেকে নিখোঁজ। তাঁর স্ত্রী এই বিষয়ে ভক্তিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী পশু চিকিৎসক এবং দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। সেই কারণে তাঁর চিকিৎসাও চলছে। চিকিৎসা চলাকালীন একাধিক সময় তাঁর সঙ্গে স্বামী সাংসারিক বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। ১১ জুলাই রাতে তাঁর সঙ্গে স্বামীর গণ্ডগোল হয়। এরপরেই স্বামী কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তারপর আর তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে পুলিস জানিয়েছে, দেহ উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি ওই পচাগলা দেহের পাশ থেকে বেশকিছু ওষুধ পাওয়া গিয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, মানসিক অবসাদ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অধিকমাত্রায় ওষুধগুলি খেয়ে ফেলার কারণেই মৃত্যু হতে পারে ওই ব্যক্তির। তবে এক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
ভক্তিনগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকী এই বিষয়ে ওই চিকিৎসকের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জঙ্গলের যেখানে ওই দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেখানে সচরাচর সাধারণ মানুষ যায় না। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি কেন ওই এলাকায় গিয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের মনে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন