বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বিঘে বিঘে জমি, জল ঢুকছে গ্রামেও - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বিঘে বিঘে জমি, জল ঢুকছে গ্রামেও



রামপুরহাট: বীরভূম ও সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডে অবিরাম বৃষ্টিপাত চলছে। তার উপরে দেউচা ও বৈধরা ব্যারেজ থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে। যার ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফুঁসতে শুরু করে দ্বারকা ও ব্রাহ্মণী নদী। বিকেলের দিকে নলহাটি ১ ব্লকের রামপুর ও রানিনগরের মাঝে ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে বিঘের পর বিঘে জমি প্লাবিত হয়ে পড়ে। সংলগ্ন গ্রামগুলিতেও জল ঢুকতে শুরু করে। রামপুরহাট মহকুমার শাসক সৌরভ পান্ডে বলেন, দুপুর থেকেই ওখানে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেচদপ্তরও বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁধ রক্ষা করা যায়নি। গ্রামবাসীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। তবে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমছে। 

বীরভূম ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে অতিবর্ষণ ও ব্যারেজের ছাড়া জলে রামপুরহাট মহকুমার দ্বারকা ও ব্রাহ্মণী নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এদিন সকালে বৈধরা ব্যারেজ থেকে  ২১,৮৮৮ কিউসেক ও দেউচা ব্যারেজ থেকে ৯,১১২ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলস্বরূপ জলস্তর হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করে। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রাহ্মণী নদীর উপর নলহাটির জগধারি ব্রিজের কাছে বিপদসীমার লেভেল ৩২.৫০ মিটার। সেখানে ৩১.৯০ মিটার পর্যন্ত জল যাচ্ছে। কার্যত কানায় কানায় জল বইছে। দ্বারকা নদেও জল বেড়েছে। দু’ বছর পর বর্ষায় মুরারইয়ের বাঁশলৈ নদীতে এত জল দেখলেন এলাকাবাসী। যেখানে বিপদসীমা ৩১.২৪ মিটার, সেখানে ৩০ মিটার পর্যন্ত জল যাচ্ছে। বাসিন্দা কাশিবুল হোসেন বলেন, দু’ বছর সেভাবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদীতে তেমন জল দেখা যায়নি। 

তবে যে হারে ব্রাহ্মণী ও দ্বারকায় জল বাড়ছে, তাতে বিপদসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে। তাই সকালেই সতর্কতামূলক পরিকল্পনা এবং সময়মতো বাস্তবায়ন করার জন্য বিডিওদের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। বলা হয়, রাতেও বিডিও এবং পঞ্চায়েত অফিস খুলে রাখতে হবে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য বিদ্যুৎ দপ্তরকে আলগা তার পরীক্ষা, উপযুক্ত আশ্রয়স্থল শনাক্ত ও নদী বাঁধগুলি ঘুরে দেখার জন্য সেচদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সকাল থেকেই নদী তীরবর্তী গ্রামগুলি ঘুরে বাসিন্দাদের সতর্ক করেন বিডিওরা। অন্যদিকে পুলিসের পক্ষ থেকে ড্রোন ক্যামেরা উড়িয়ে নজরদারি শুরু হয়।  

এরই মধ্যে রামপুর ও রানিনগরের মাঝে ফুলারিতলার কাছে ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বিডিও, পুলিস এবং সেচদপ্তরের আধিকারিকরা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করে। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রামপুর, রানিনগর, কেলাই, গোপগ্রাম, রধিপুর, মকরমপুর, কানুপুর ও রামপুরহাট ২ ব্লকের বালসা গ্রামের বাসিন্দারা। কেলাই গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত লেট বলেন, বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্রচুর জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। গ্রামের দিকেও জল আসছে। রাতের দিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। পরিবার নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। সেই সঙ্গে ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। 

অন্যদিকে নলহাটি-১ ব্লকের ব্রাহ্মণী নদীর সোনারকুণ্ডু, ভগবতীপুর, ঝাড়পাড়া ও দেবগ্রাম ঘাটের কজওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে।  মোস্তফাডাঙাপাড়া যাওয়ার পিচের রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। বহু চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মোস্তফাডাঙার বাসিন্দা মহম্মদ রফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০০ সালের পর নদীতে এত জল দেখলাম। 

জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, বাঁধ ভাঙার খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে বিডিও, পুলিস ও সেচদপ্তরের আধিকারিকরা রয়েছেন। আমিও যাচ্ছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তত প্রশাসন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...