বিষ্ণুপুর: ‘ভূতে’ তুলছে গ্যাস! গ্রাহকের অজান্তেই সাবসিডির টাকা ঢুকছে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। বিষ্ণুপুরে উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস নিয়ে এমনই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, কোনওকালে তাঁরা উজ্জ্বলার গ্যাস পাননি। কিন্তু, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সাবসিডির টাকা ঢুকে যাচ্ছে। মোবাইলে মেসেজ আসার পর তাঁরা বুঝতে পারছেন, তাঁদের নামের গ্যাস তুলছে। কিন্তু, কে বা কারা সেই গ্যাস তুলছে, তা তাঁরা জানতে পারছেন না। বিষ্ণুপুরে এমন ঘটনা অনেকের ক্ষেত্রে হয়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
এইচপি গ্যাসের এক ডিলার বঙ্কিম লোহার বলেন, আমাদের গ্রাহকরা নিয়মিত গ্যাস তোলেন। তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই। তবে অনেকেই আমাদের অফিসে এব্যাপারে খোঁজ নিতে আসছেন। আমরা আধার কার্ড চেক করে দেখেছি, সেগুলি আমাদের এজেন্সিতে নথিভুক্ত নেই। বাইরের এজেন্সির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।
বিষ্ণুপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গাবডোবার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, প্রায় এক বছর ধরে উজ্জ্বলা যোজনায় আমার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৩০টাকা করে এইচপি গ্যাসের সাবসিডি ঢুকছে। কিন্তু, আমরা কোনওদিন উজ্জ্বলার গ্যাস পাইনি। আমাদের নামে উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাসের সংযোগ আছে কি না, সেটাও জানি না। প্রথম দিকে বিষয়টিকে ততটা আমল দিইনি। কিন্তু, সরকারি টাকা আমাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। পরে বিপদে পড়তে হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে বহিরাগত কয়েকজন বিষ্ণুপুর মহকুমা বিদ্যালয়ের সামনে একটি শিবির করে উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাসের জন্য স্থানীয়দের কাছ থেকে নথিপত্র জোগাড় করেছিল। সরকারি গ্যাস পাওয়ার আশায় তখন অনেকেই কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, তাদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীকালে এলাকার অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এইচপি গ্যাসের সাবসিডি ঢুকতে শুরু করে। কোথা থেকে কীভাবে ওই টাকা ঢুকছে, তা বুঝতে না পারায় বিষয়টিতে তেমন কেউ আমল দেননি। কিন্তু, সরকারি টাকা ব্যাঙ্কে ঢুকছে জেনে অনেকেরই মনে আশঙ্কা তৈরি হয়। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে আলোচনা করেন। তখনই তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করা শুরু করেন। যারা তিনবছর আগে কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিল, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু, সন্ধান না মেলায় বাসিন্দারা বেশ চিন্তায় পড়েন।
গ্রাহকদের একাংশের বক্তব্য, তিন বছর আগে যারা নথি নিয়ে গিয়েছিল, তারাই কৌশলে বাসিন্দাদের নামে কানেকশন করিয়ে নিজেরাই ওই গ্যাস তুলে কালোবাজারি করে থাকতে পারে। তার কারণ গ্যাস না তুললে তো সাবসিডি ঢোকার কথা নয়। এমনকী ক্যাসমেমো নম্বর সহ মোবাইলে মেসেজে আসছে। ওই গ্যাস তো আর ভূতে তুলছে না। তাই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন