শিলিগুড়ি: পর পর তিনটি অপারেশন। দু’টি এটিএম এবং একটি সোনার দোকান লুট। একমাসের ব্যবধানে শিলিগুড়িতে লুটের অপারেশনে দুষ্কৃতীরা ‘হ্যাট্রিক’ করায় আতঙ্কিত নাগরিকরা। তাঁরা পুলিসের ভূমিকা নিয়ে তুলেছেন বিস্তর প্রশ্ন। কেউ বলছেন, শহরের নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিস কার্যত দিশাহীন। আবার অনেকের কটাক্ষ, ‘পুলিস নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে’। যদিও পুলিস এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, শহরের নিরাপত্তায় বাহিনী যথেষ্ট সতর্ক।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, কে, কী বলছেন, সেসব নিয়ে ভাবছি না। আমরা হাত গুটিয়ে বসে নেই। অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে পুলিস। ইতিমধ্যেই চম্পাসারিতে এটিএম এবং হিলকার্ট রোডে সোনার দোকান লুটের ঘটনায় ভিনরাজ্য থেকে কয়েকজন দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করা হয়েছে। শহরের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিস সর্বদা সতর্ক। কাজেই এ ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
১৮ জুন গভীর রাতে প্রধাননগর থানার চম্পাসারিতে জোড়া এটিএম থেকে প্রায় ১০ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা লুট করে হরিয়ানার নুহ গ্যাং। সেই ঘটনার পর ২২ জুন দিনের আলোতেই শহরের হিলকার্ট রোডে একটি জুয়েলারি দোকানে অপারেশন চালায় ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের একটি গ্যাং। অভিযোগ, গান পয়েন্টে দাঁড় করিয়ে দোকানের কর্মচারীদের মারধর করে সোনা ও হিরের গয়না নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। সংশ্লিষ্ট দু’টি ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের শহরের ইস্টার্ন বাইপাসে দুষ্কৃতীরা এটিএমে হানা দিয়ে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা লুট করে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি।
পরপর এমন ঘটনায় শহরবাসী রীতিমতো আতঙ্কিত। তাঁদের একাংশ পুলিসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। হিলকার্ট রোড ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান বিজয়কুমার গুপ্তা বলেন, শহরে পুলিসের দু’টি জোন। প্রতিটি জোনে ডিসি ও এসি পদমর্যাদার একাধিক অফিসার রয়েছেন। তা সত্ত্বেও এক মাসের মধ্যে অপরাধীরা লুটের ঘটনায় কী ভাবে হ্যাট্রিক করল, সেটা অকল্পনীয়। মনে হচ্ছে এখানকার পুলিস নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায়মুহুরি বলেন, নিরাপত্তার জন্য মাঝে পুলিস পাড়া বৈঠকের সূচনা করেছিল। সিসি ক্যামেরাও বসিয়েছে। তা হলেও শহরের নিরাপত্তায় পুলিস দিশাহনীভাবে চলছে বলেই মনে হচ্ছে। পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সমাজকর্মী অনিমেষ বসু বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে এই শহর গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানকার নিরাপত্তার জন্য পুলিসের নজরদারি ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।
এদিকে পুলিসের এক কর্তা বলেন, অধিকাংশ এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী রাখে না ব্যাঙ্ক। দুষ্কৃতীদের হানার সময় কোনও বহু ক্ষেত্রে এটিএমে অ্যালার্ম বাজছে না। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস
দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন