নয়াদিল্লি: দালালরাজেই উধাও হয়ে যাচ্ছিল ট্রেনের যাবতীয় তৎকাল টিকিট। জরুরি প্রয়োজনেও এতদিন তা পাচ্ছিলেন না সাধারণ রেল যাত্রীরা। এবার কার্যত প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল রেলের দালালরাজের এহেন তত্ত্ব। মঙ্গলবার থেকে ট্রেনের তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। সেইমতো আইআরসিটিসির অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার যাচাই না করালে কোনও ব্যক্তি ট্রেনের তৎকাল টিকিট বুকিং করতে পারছেন না। শুধু তাই নয়। তৎকাল টিকিট বুকিং শুরু হওয়ার প্রথম ৩০ মিনিট এজেন্ট বুকিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ট্রেনের এসি ক্লাসে তৎকাল টিকিট বুকিং শুরু হয় সকাল ১০টা থেকে। এক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ১০টার আগে বুকিং করতে পারছেন না রেল এজেন্টরা। অন্যদিকে নন-এসি ক্লাসে তৎকাল বুকিং শুরু হয় সকাল ১১টা থেকে। সেক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ১১টার পর রেল এজেন্টদের জন্য তৎকাল টিকিটের বুকিং উইন্ডো ওপেন হচ্ছে মঙ্গলবার থেকে।
রেল যাত্রীদের একটি বড় অংশের দাবি, আধারভিত্তিক তৎকাল টিকিট বুকিং শুরু হতেই এবং এজেন্টদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বুকিংয়ে বিধিনিষেধ জারি হওয়ার পরেই ‘কনফার্মড’ আসন পাওয়া যাচ্ছে। এতদিন যেখানে তৎকাল বুকিং উইন্ডো ওপেন হওয়ার মিনিট তিনেকের মধ্যেই দালালদের হাতযশে সব টিকিট উধাও হয়ে যেত, মঙ্গলবার সেখানে দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনের তৎকাল টিকিট ‘অ্যাভেলেবল’ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মতো একগুচ্ছ প্রথমসারির দূরপাল্লার ট্রেন। এদিন বিকেলে দেখা যায়, তৎকাল কোটায় শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিটও ‘অ্যাভেলেবল’ রয়েছে। যদিও নয়া ব্যবস্থা চালুর পরেও অভিযোগ এড়াতে পারেনি রেলমন্ত্রক। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বুকিং শুরু হওয়ার পর এদিন বহু ক্ষেত্রেই আইআরসিটিসির অ্যাপ ‘ক্র্যাশ’ করে গিয়েছে। অনেক সময় আগের মতোই বুকিংয়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে ‘এরর’ মেসেজ এসেছে। ফলে টিকিট কাটতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেকেই টিকিট কাটতে পারেননি।
রেলমন্ত্রকের অবশ্য ব্যাখ্যা, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে আরও উদ্ভাবনের পথেই হাঁটা হচ্ছে। সেইমতো এদিনই সুপার-অ্যাপ ‘রেল ওয়ান’ চালু করেছেন মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। মঙ্গলবার দিল্লির ইন্ডিয়া হ্যাবিটেট সেন্টারে রেলের প্রযুক্তিগত সহায়ক ‘ক্রিস’এর ৪০তম প্রতিষ্ঠা দিবস অনুষ্ঠানে এই নতুন অ্যাপ চালু করেছেন বৈষ্ণব। এর ফলে এবার একই ছাতার তলায় রেলের যাবতীয় পরিষেবা মিলতে চলেছে। আলাদা করে কোনও অ্যাপ সাধারণ মানুষকে ইনস্টল করতে হবে না। রেল জানিয়েছে, এই অ্যাপ থেকে ট্রেনের অসংরক্ষিত শ্রেণি এবং প্ল্যাটফর্ম টিকিট কাটলে সরাসরি তিন শতাংশ ছাড় পাবেন সাধারণ যাত্রীরা। পাশাপাশি লাইভ ট্রেন ট্র্যাকিং, অভিযোগ দায়ের, ই-কেটারিং, পোর্টার বুকিং, লাস্ট-মাইল ট্যাক্সির মতো পরিষেবাও মিলবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন