বালুরঘাট: সাতদিন ধরে বাপের বাড়িতে স্ত্রী। তাতেই রেগে লাল স্বামী। বাপের বাড়ি থেকে দেরি করে শ্বশুরবাড়িতে ফেরায় স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মার স্বামীর। দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিলে গুরুতর আঘাত লাগে বধূর। গুরুতর জখম এবং রক্তাক্ত অবস্থায় বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করার পর মৃত্যু হয় তাঁর।
অভিযোগ, ওই বধূকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এনিয়ে বধূর পরিবার হিলি থানার লিখিত অভিযোগ করলে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হিলি থানার তিওরের শ্যামপুর এলাকায়। হিলি থানার আইসি শীর্ষেন্দু দাস বলেন, অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত বধূর নাম নিতু সিং ঘোষ (৩৬)। বাপের বাড়ি মালদহ জেলার ইংলিশবাজার থানার উত্তর বালুচর গ্রামে। ১৭ বছর আগে তাঁর সঙ্গে হিলি থানার তিওরের শ্যামপুরের বাসিন্দা মনোজ ঘোষের বিয়ে হয়। সে নাইট সার্ভিস বাসের কর্মী। দম্পতির দুই মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই নানা কারণে বধূর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এনিয়ে নানা সময়ে বহুবার মীমাংসা হয়েছে দুই পরিবারের। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। সাতদিন আগে নিতু তাঁর বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে মালদহের বাড়িতে গিয়েছিলেন। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল অভিযুক্ত স্বামী। অভিযোগ, ২১ জুলাই হিলিতে শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন নিতু। সেই রাতে ওই বধূকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তিনি বাড়িতে ফিরলে ফের লাঠি দিয়ে মারধর এবং দেওয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হয়ে গেলে ওই বধূকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর চিকিৎসা চলাকালীন ভোররাতে মৃত্যু হয়।
বধূর বাপের বাড়ির তরফে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এবিষয়ে মৃতের ভাই প্রতাপ সিং বলেন, আমার দিদিকে মাঝেমধ্যে নানারকম ভাবে অত্যাচার করা হতো। সোমবারই আমাদের বাড়ি থেকে ফিরেছিল দিদি। তারপর এমন মারধর করেছে যে তার মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্তদের আমরা কঠোর শাস্তি চাই।
একাধিকবার বিভিন্ন কারণে বধূর উপর অত্যাচারের অভিযোগ মানতে চায়নি অভিযুক্তের পরিবার। এদিন মারধর করে বধূকে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এবিষয়ে অভিযুক্ত স্বামীর জামাইবাবু অয়ন ঘোষ বলেন, অত্যাচার ও মারধর করা হয়নি। হয়তো পড়ে গিয়ে মাথায় চোট লেগে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই সমস্ত বিষয় জানা যাবে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নিহত বধূর পরিজনরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন