নয়াদিল্লি: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্তা। সংসদে সরকারকে জবাব দিতে হবে। রবিবার এই মর্মে সর্বদলীয় বৈঠকে সরব হল বিরোধীরা। আজ থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। চলবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। বিরোধীরা যেমন পহেলগাঁও ইস্যুতে সোচ্চার হবে, সরকার তেমনই সেইসব ইস্যু থেকে দূরে থাকতে প্রবল চেষ্টা চালাবে। ১১টি বিল পাশে জোর দেবে। মণিপুরে বাড়ানো হবে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদও। পহেলগাঁওয়ের ব্যর্থতার বদলে অপারেশন সিন্দুরের সাফল্য নিয়েই চর্চায় জোর দেবে। যদিও বিরোধীরা স্পষ্ট আকারে সরকারকে বলে দিয়েছে, পহেলগাঁও ইস্যুতে অন্য কেউ নয়, সংসদে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। যদিও সংসদ চলাকালনীই নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন বিদেশ সফরে।
রবিবার সর্বদলীয় বৈঠকে সরকারের পক্ষে হাজির ছিলেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু, অর্জুনরাম মেঘওয়াল ও জে পি নাড্ডা। অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের তরফে জয়রাম রমেশ, গৌরব গগৈ, সঞ্জয় সিং, সুপ্রিয়া সুলে, এন কে প্রেমচন্দ্রন, রামগোপাল যাদবের মতো সাংসদরা। ৫১টি রাজনৈতিক দলের ৫৪ সদস্য বৈঠকে হাজির ছিলেন। বৈঠকে এদিন তৃণমূলের কেউ হাজির ছিলেন না। কলকাতায় দলের শহিদ দিবস কর্মসূচির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তবে তাঁরা না থাকলেও আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং বাঙালির উপর হেনস্তার প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, বাংলায় কথা বললেই গরিব মানুষগুলোকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে কেন উচ্ছেদের চেষ্টা হবে? প্রধানমন্ত্রী তো দিল্লিতে ভোট প্রচারে বলেছিলেন, যাঁহা ঝুপড়ি, উঁহা মকান। অর্থাৎ উচ্ছেদ না করে গরিবদের ওই জায়গাতেই বাড়ি করে দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছেটা কী?
জানা গিয়েছে, বাদল অধিবেশনেই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে পদচ্যূত করতে (চালু কথায় ইমপিচমেন্ট) সরকার পক্ষ উদ্যোগী। বিরোধীরাও তা চাইছেন। এ ব্যাপারে একদিকে যেমন লোকসভার স্পিকার, অন্যদিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে সাংসদদের সই করা চারপাতার চিঠিও (নোটিস) তৈরি। আজই কোনও একটি সভায় এই নোটিস দেওয়া হতেও পারে। গত ১৪ মার্চ বিচারপতি ভার্মার দিল্লির ৩০ তুঘলগ রোডের বাংলোয় অগ্নিকাণ্ডে অগুনতি অবৈধ টাকা পাওয়া গিয়েছে বলেই অভিযোগ।
এই ঘটনায় জনমানসে বিশ্বাসে আঘাত বলেই জনপ্রতিনিধিদের মত। তাই সুপ্রিম কোর্ট যে বিচারপতি ভার্মাকে প্রাথমিকভাবে দোষী বলে চিহ্নিত করেছে, তারই ভিত্তিতে তাঁকে পদ থেকে সরানোর তোড়জোর শুরু হচ্ছে সংসদে। সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিকে পদচ্যূত করতে লোকসভায় কমপক্ষে ১০০ জন, অথবা রাজ্যসভায় কমপক্ষে ৫০ জন সাংসদের সই করা নোটিস জমা করতে হয়। তারপর লোকসভার স্পিকার বা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বিষয়টি যুক্তিগ্রাহ্য মনে করলে পদচ্যূতর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন