আসানসোল: রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ছাগল চুরির চক্রের হদিশ পেল অণ্ডাল থানার উখরা ফাঁড়ির পুলিস। ফাঁকা মাঠে চরতে থাকা ছাগলদের পাউরুটি, বিস্কুট দিয়ে বশ মানিয়ে বিলাসবহুল গাড়িতে তুলে ভোকাট্টা। তদন্তে নেমে পুলিসের চোখ ছানাবড়া। ছাগল চুরির পিছনে রয়েছে একটি সংগঠিত চক্র। যার ‘বস’ কলকাতার খিদিরপুরের আলি বাবা। তার চারটি বিলাসবহুল গাড়িতে করে রাজ্যজুড়ে ছাগল চুরির চক্র চালাচ্ছে সে। প্রতিদিন শুধু ছাগল চুরি করিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় তার। পুলিস এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। খিদিরপুরে অভিযানেও গিয়েছে। কিন্তু আলির নাগাল পায়নি।
এসিপি পিন্টু সাহা বলেন, ছাগল চুরি বলে বিষয়টি মোটেই হাল্কা ভাবে নেওয়ার নয়। রাজ্যজুড়ে সংগঠিত ভাবে এই অপরাধ হচ্ছে। মূল চক্রীরা রীতিমতো এজেন্ট রেখে ছাগল চুরি করাচ্ছে। আমরা একটি বিলাসবহুল গাড়ি সহ একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি। মূল মাথার খোঁজ চলছে।
অণ্ডাল থানার উখরায় তিনটি ছাগল চুরির ঘটনায় শোরগোল পড়ে কয়েকদিন আগেই। একটি দামি গাড়িতে করে ছাগল চুরি করে পালাতে দেখেন স্থানীয়রা। পুলিস সেই গাড়ি ধাওয়া করে। দামি গাড়ির নাগাল সহজে পায়নি পুলিস। গাড়ির নম্বর দিয়ে বিভিন্ন থানাকে সতর্ক করা হয়। কাঁকসা থানার মলানদিঘি ফাঁড়ি এলাকায় গাড়িটির হদিশ মেলে। ফিল্মি কায়দায় গাড়ি ধাওয়া করে বিভিন্ন জায়গায় নাকা করে অবশেষে বাগে আনা যায় চোরদের। রাস্তায় গাড়ি রেখে দিয়ে দু’জনে দুটি পৃথক টোটোয় চেপে পালিয়ে যায়। গাড়ি থেকে তিনটি ছাগল উদ্ধার করে পুলিস। স্থানীয়দের সহযোগিতায় টোটোয় যাত্রী সেজে যাওয়া অবস্থাতেই খিদিরপুরের গোলাম মহম্মদকে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
তাকে জেরা করেই ছাগল চুরি দিয়ে বড় চক্রের হদিশ মেলে। পুলিস জানতে পেরেছে, চক্রের মাথায় রয়েছে আলি বাবা। তার একাধিক দামি গাড়ি রয়েছে। সে গাড়িগুলিই ছাগল চুরির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এই চক্র সক্রিয়। জেলায় জেলায় তার সোর্স রয়েছে। কোন এলাকায় বেশি সংখ্যক ছাগল থাকে তার সন্ধান দেয় তারা। সেই এলাকায় সিসি ক্যামেরা আছে কি না, সে খবর দেয় সোর্সরা। সেই মতো অপারেশনের ছক করা হয়। লক্ষ্য রাখা হয় কোনও ভাবেই যাতে সিসি ক্যামেরায় বন্দি না হয় ছাগল চুরির কীর্তি। গ্রামের ফাঁকা জায়গায় যেখানে ছাগল চরে বেড়ায়, সেখানেই গাড়ি দাঁড় করানো হয়। এরপর এলাকা ফাঁকা থাকলে বিস্কুট, পাউরুটি দিয়ে গাড়ির কাছে নিয়ে আসা হয় ছাগলগুলিকে। গাড়িতে ঢুকিয়েও খাবার দেওয়া হয়। সুযোগ বুঝে দড়ি দিয়ে মুখ বেঁধে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় তারা। আলি বাবার সঙ্গে একাধিক মাংসের দোকানের যোগাযোগ রয়েছে। সেখানেই ছাগলগুলি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন