মেদিনীপুর ও সংবাদদাতা ঘাটাল: অবশেষে বৃষ্টি ধরেছে। হাসি ফুটেছে গ্রামবাসীদের মুখে। বুধবার রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে মেদিনীপুর শহর, কেশপুর ও ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, জেলার একজন মানুষও যেন সরকারি ত্রাণ ও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মেদিনীপুর শহরের অ্যানিকেট বাঁধ পরিদর্শন করেন মানস ভুঁইয়া ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে অ্যানিকেট বাঁধের মাধ্যমে প্রায় ৪০ হাজার কিউসেক জল বের করা হচ্ছে। যদিও ঘাটালের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। ঘাটালের বেশকিছু এলাকা ফের জলমগ্ন হয়েছে।
এদিন মানস ভুঁইয়া বলেন, এ বছর বৃষ্টি অনেক বেশি হচ্ছে। যার ফলে সমস্যা বেড়েছে। জেলা প্রশাসন সর্বদা সজাগ রয়েছে। সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। রাজ্য সরকার সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর এখনও পর্যন্ত দ্বিগুণের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মেদিনীপুর শহর লাগোয়া অ্যানিকেট বাঁধ পরিদর্শনের পর কেশপুর ব্লকের খড়িকা এলাকায় যান মানস ভুঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের দলনেতা মহম্মদ রফিক সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। সেখানে খড়িকা গ্রামের রাস্তা তৈরির নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এরপর মানসবাবু ঘাটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মহম্মদ রফিক বলেন, পারাং নদীর জলে ঢুকে যাওয়ায় গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়েন। বুধবার দুপুরেই গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়। মানসবাবু খুবই সহযোগিতা করছেন। জল নামতে শুরু করেছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
অপরদিকে, ঘাটাল মহকুমায় ফের নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এবার নিয়ে এক মাসের মধ্যে তিনবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল। চন্দ্রকোণা-১, চন্দ্রকোণা-২, ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘাটাল পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি এবং খড়ার পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড ফের প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই রূপনারায়ণ, শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, দাসপুরের কল্মীজোড়ে কংসাবতী নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এদিন বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে ঘাটালে সেচমন্ত্রী, জেলাশাসক এবং সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই জেলার প্রতিটি এলাকায় সর্বক্ষণ নজর রাখছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রশাসন সব দিক থেকে তৈরি। মন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, জুন মাসে ঘাটাল মহকুমায় যে সমস্ত নদী ও খালের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল এই প্রবল বন্যায় তা মেরামতি করা সম্ভব নয়। জল একটু কমলেই প্রশাসন বাঁধ সংস্কারের কাজে হাত দেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন