কলকাতা: বুধবার দুপুর। কলকাতার বিচারভবনে ভরা এজলাস। কড়া নিরাপত্তায় চলছিল রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার শুনানি। বিচার চলাকালে তিন জেএমবি জঙ্গি আচমকাই সকলকে অবাক করে বলে ওঠে ‘দোষ স্বীকার করছি। কোনও দেশ বিরোধী কাজকর্ম আর করব না। বাড়ি ফিরতে চাই। পরিবার‑পরিজন নিয়ে বাঁচতে চাই। খেটে খেতে চাই।’ জেলবন্দি ওই তিন জঙ্গি হল নুর আলম মোমিন, পয়গম্বর শেখ ও আহমেদ আলি। সকলের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ। অভিযুক্ত এই তিন জঙ্গির কথা শোনার পর মুখ্য বিচারক সুকুমার রায় বলেন, সব বুঝে দোষ কবুল করছেন তো? মনে রাখবেন দোষ স্বীকার করলেই পার পাওয়া যায় না। আইনের বিধান মেনেই দোষী সাব্যস্ত করে আপনাদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা হবে। জেলে গিয়ে চিন্তাভাবনা করে ফের আপনারা আদালতে এসে বক্তব্য পেশ করুন। এরপরই ফের তাদের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্ত জঙ্গিদের দুই কৌঁসুলি ফজলে আহমেদ খান ও জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের মক্কেলরা সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চাইছে। সেই কারণেই তারা আদালতের কাছে এই আর্জি জানিয়েছে।’
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে নাশকতা ও নানা অপরাধমূল কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০২০ সালে কলকাতা পুলিসের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে ধরা পড়ে এই তিন জঙ্গি। পরবর্তী সময় এই ঘটনায় ধাপে ধাপে আরও ১৮ জন অভিযুক্ত ধরা পড়ে। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়। ইতিমধ্যে নয়জন জঙ্গি আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। বাকি ১২ জন জেএমবি জঙ্গির মধ্যে এদিন তিন জঙ্গি আদালতে দোষ স্বীকার করে। এবং কম সাজার আবেদন জানায়। মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি গণেশ মাইতি জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, জালিয়াতি, ষড়যন্ত্র, বিস্ফোরক সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিস তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট পেশ করে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় নানা জাল নথিপত্র, বিস্ফোরক প্রভৃতি। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ জন জেএমবি জঙ্গির মধ্যে এদিন তিনজন জঙ্গি দোষ স্বীকার করলেও বাকি ন’জনের বিরুদ্ধে এই সন্ত্রাসবাদী মামলার শুনানি যথারীতি চলবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন