পুরী: একদিকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি নাশকতা, অন্যদিকে কুম্ভে সরকারি অব্যবস্থা—দু’টি ক্ষেত্রেই ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা’র বলি হতে হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। এই দুই বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে চলতি বছরের রথযাত্রা উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তৎপর ওড়িশা প্রশাসন। আগামী কাল, শুক্রবার পুরীতে রথযাত্রা উৎসবের সূচনা। রথে চেপে বেরোবেন জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রা। সেই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী হাজির হবেন শ্রীধামে। তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গোটা পুরী শহরকে কার্যত দুর্গে পরিণত করছে প্রশাসন। মোতায়েন করা হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার নিরাপত্তা কর্মী। থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও আঁটোসাঁটো করতে এবার এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে ওড়িশা সরকার। শহরজুড়ে বসানো হচ্ছে আড়াইশোর বেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর সিসিক্যামেরা। এছাড়া, পর্যটকদের সুবিধার জন্য বিশেষ চ্যাটবট অ্যাপও চালু করেছে রাজ্য সরকার। এরমাধ্যমে পার্কিং, রুট ম্যাপ সহ একাধিক তথ্য সহজেই জানতে পারবেন পুণ্যার্থীরা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা মহড়া চলেছে। তা খতিয়ে দেখেছেন ওড়িশার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিস (ডিজিপি) ওয়াই বি খুরানিয়াও। তিনি জানান, এই প্রথম পুরীতে অত্যাধুনিক কমান্ড ও কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। উত্তরা চক থেকে পুরী শহর এবং পুরী থেকে কোনারক রুটে ২৭৫টি এআই যুক্ত ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। কিন্তু, কী কাজ করবে ওই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরাগুলি? ডিজিপি জানিয়েছেন, যানবাহন চলাচল, কোথায় কত ভিড় হচ্ছে—তার উপর নজরদাবি চালানো হবে। কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জন সাধারণ মানুষের। পুরীর রথযাত্রায় হাজির হবেন অন্তত ১৫ লক্ষ পুণ্যার্থী। ফলে এই পর্বে শ্রীক্ষেত্রকে নিশানা করতে পারে সন্ত্রাসবাদীরা। তাই চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রশাসন। এই প্রথম শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন করা হচ্ছে ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড (এনএসজি)-র স্নাইপারদের। বহুতলের ছাদ থেকে নজরদারি চালাবেন তাঁরা। সেইসঙ্গে থাকছে অ্যান্টি ড্রোন টেকনলজি। ড্রোন ব্যবহার করে সর্বত্র নজর রাখবে পুলিসও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন