উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা বই ভুলে ভরা! অভিযোগের পাহাড় - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা বই ভুলে ভরা! অভিযোগের পাহাড়



কলকাতা: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘কেন এল না’। কবির ‘যত দূরেই যাই’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া কবিতাটি উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু নতুন বাংলা বইতে লেখা হয়েছে, কবিতাটি নাকি ‘পদাতিক’ কাব্যগ্রন্থের! শুধু কি তাই! কবির ‘দেশিকোত্তম’ সম্মান প্রাপ্তিকে তুলনা করা হয়েছে ‘ডি লিট’-এর সঙ্গে। যদিও দু’টি বিষয় সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানেই শেষ নয়!  জীবনানন্দ দাশের ‘ঝরা পালক’ কাব্যগ্রন্থের প্রকাশকাল ১৯২৭-এর পরিবর্তে লেখা হয়েছে ১৯২৮। বইতে এমনও লেখা হয়েছে, জীবনানন্দ নাকি তাঁর জীবদ্দশায় কোনও স্বীকৃতি পাননি। শিক্ষকদের দাবি, এই তথ্যও ঠিক নয়। কারণ ‘বনলতা সেন’ শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থের স্বীকৃতি পেয়েছিল তাঁর জীবদ্দশাতেই। 

সবে স্কুলগুলিতে আসতে শুরু করেছে উচ্চ মাধ্যমিকের নতুন বই। এর মধ্যেই এরকম গুচ্ছ গুচ্ছ ভুলভ্রান্তির অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন শিক্ষকরা। বাংলার তৃতীয় এবং চতুর্থ সেমেস্টারের বইয়ে অনেক ভুল তাঁদের নজরে এসেছে। গুরুতর ভ্রান্তিগুলি অবিলম্বে সংশোধনের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও কয়েকটি ভুলভ্রান্তি সামনে এনেছেন শিক্ষকরা। প্রবন্ধ হিসেবে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের একটি চিঠি। ‘উদ্বোধন’ পত্রিকার সম্পাদককে লেখা সেই চিঠিতে লেখালেখির ক্ষেত্রে আলঙ্কারিক সাধুভাষার পরিবর্তে চলিত ভাষা ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। মজার বিষয় হল, এই চিঠি প্রসঙ্গে বইতে যে টিকা দেওয়া হয়েছে, তা সাধুভাষায় লেখা। পাবলো নেরুদার লেখা অনুবাদ করেছেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। ‘তার সঙ্গে’ নামক সেই কবিতা তৃতীয় সেমেস্টারে পাঠ্য। তাতে মূল বাংলা কবিতার ভাষা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কবি এবং লেখকের কাব্যগ্রন্থ, গল্প সংকলন সম্পর্কে লেখা হয়েছে, সেগুলি নাকি কোনও পত্রিকায় প্রকাশিত! কিন্তু কাব্যগ্রন্থ বা গল্প সংকলন কীভাবে একটি পত্রিকার সংস্করণে প্রকাশিত হতে পারে! কখনও আবার কোনও লেখককে একটি আস্ত গল্প সংকলণের রচয়িতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনা হল, অনেক ধরনের গল্প এক জায়গায় এনে একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। তাহলে সম্পূর্ণ সংকলনের রচয়িতা কোনও একজন কীভাবে হতে পারেন? প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা।

এদিকে, বই তৈরি করতে দেরি হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তাদের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার মডেল ক্লাসের ভিডিও আপলোড করে রেখেছে। সেখানে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে রীতিমতো ভ্রান্তিবিলাস ঘটেছে। ছোট গল্পকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘আদরিণী’ গল্পটি পাঠ্য রয়েছে। অথচ লেখক পরিচিতিতে তাঁকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে রবীন্দ্র গবেষক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ‘আদরিণী’র লেখক প্রভাতকুমার প্রয়াত হয়েছেন ১৯৩২ সালে। অথচ তিনি নাকি রবীন্দ্র পুরস্কার, দেশিকোত্তম এবং পদ্মভূষণ সম্মান পেয়েছেন! আসলে এসব সম্মান দেওয়া শুরুই হয়েছে প্রভাতকুমারের মৃ‌ত্যুর অন্তত দু’দশক পর। এসব সম্মান আসলে পেয়েছিলেন রবীন্দ্র গবেষক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়। এ বিষয়ে সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘কিছু ভুলের অভিযোগ পেয়েছি। বিস্তারিত রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি। ভুল পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধন করা হবে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...