কলকাতা: মাধ্যমিকের রিভিউ-স্ক্রুটিনির ফল প্রকাশের পর বদলে গেল মেধা তালিকা। মেধা তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হল ৯ কৃতী পড়ুয়া। আগে ওই তালিকায় মোট ৬৬ জন কৃতী পড়ুয়ার ঠাঁই হয়েছিল। এবার তা বেড়ে হল ৭৫। বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে রিভিউ-স্ক্রুটিনির ফল প্রকাশ করা হয়। এনিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্টও করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বাঁকুড়ার রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠের ছাত্র দেবজিৎ লাহা ছিল একাদশ স্থানে। তাঁর নম্বর বেড়ে ৬৮৮ হওয়ায় সে চলে এসেছে অষ্টম স্থানে। একইভাবে একাদশ থেকে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের ছাত্র অন্তরীপ মাইতি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র চয়ন রায় (৬৮৭) একাদশ থেকে নবম স্থানে উঠে এসেছে। কোচবিহারের মাথাভাঙা হাইস্কুলের ছাত্রী অনন্যা মজুমদার এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সারদা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী প্রেরণা বৈদ্য— দু’জনেই একাদশ স্থানে থাকলেও এখন মেধা তালিকায় তারা দশম স্থানে (৬৮৬)।
দ্বাদশ স্থানে ছিল তিনজন। পূর্ব মেদিনীপুরের রামকৃষ্ণ শিক্ষামন্দিরের ছাত্র রূপম দীক্ষিত রিভিউয়ের পর নবম স্থানে চলে আসে। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র প্রজ্ঞান দেবনাথ এবং বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ছাত্র সায়নদীপ ঘোষ উঠে এসেছে দশম স্থানে। পূর্ব মেদিনীপুরের কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সোহম করণ আগে ত্রয়োদশ স্থানে থাকলেও এখন দশম স্থানে রয়েছে সে। আগে থেকেই মেধা তালিকায় থাকা চার পরীক্ষার্থীর র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছে। কন্টাই মডেল স্কুলের সুপ্রতীক মান্না চতুর্থর বদলে এখন দ্বিতীয় স্থানাধিকারী (৬৯৪)। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সৃজন প্রামাণিক এবং বাঁকুড়ার কংসাবতী শিশু বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌপ্তিক মুখোপাধ্যায় অষ্টম থেকে সপ্তম স্থানে (৬৮৯) উঠে এসেছে। বীরভূমের শান্তিনিকেতন নব নালন্দা হাইস্কুলের ছাত্র সম্যক দাস দশম স্থান থেকে এখন মেধা তালিকায় নবম স্থানের অধিকারী।
একই জেলার এবং একই স্কুলের একাধিক ছাত্রের র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি দেখে জল্পনা ছড়িয়েছে, এই ভুল সম্ভবত একজন পরীক্ষকেরই। এ বছর উত্তরপত্রে নম্বর বসানোর কেজিং সিস্টেম ছাড়াও ধাপে ধাপে নম্বর টুকে রাখার জন্য পৃথক একটি কেজিং শিট পর্ষদের তরফে পরীক্ষকদের দেওয়া হয়েছিল। দু’বার করে কেন একই কাজ করা হবে, এই প্রশ্ন তুলে পরীক্ষকদের একাংশ ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন। তবে সেক্ষেত্রে পর্ষদের বক্তব্য ছিল, মূল্যায়ন আরও নির্ভুল করার জন্যই এই ব্যবস্থা। কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এ বছর স্ক্রুটিনিতে (নম্বর যোগে ভুল বা একেবারেই নম্বর না দেওয়া) মার্কস বেড়েছে ১০ হাজার ৬০টি উত্তরপত্রে। অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে রিভিউয়ে ১ হাজার ১৮২টি উত্তরপত্রে নম্বর বেড়েছে। পর্ষদের বক্তব্য, ভুল একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে এ বছর ৫৬ হাজার পরীক্ষার্থী বেশি থাকলেও গত বার স্ক্রুটিনিতে যত জনের নম্বর বেড়েছিল, সেই সংখ্যা এবার ২৪০০ কম। রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও সংখ্যাটা গতবারের চেয়ে ৫৫টি কম। পর্ষদের আরও যুক্তি, কৃতীদের তালিকায় থাকা ছাত্রছাত্রীরা সমমেধার। কিন্তু এক-দু’নম্বরের ব্যবধানে র্যাঙ্কে বড় ফারাক হয়ে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন