নয়াদিল্লি: দূরপাল্লার কোনও ট্রেনেই আর ওয়েটিং লিস্ট থাকবে না। সব রেল যাত্রীই কনফার্মড টিকিট পাবেন। কয়েক বছর আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে এই ঘোষণা করেছিল রেলমন্ত্রক। পরবর্তীকালে আরও একাধিকবার এই সংক্রান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। শূন্যে নামানো যায়নি অপেক্ষমান ট্রেন যাত্রীদের তালিকা। বরং যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘ হতে থাকা ওয়েটিং লিস্টের টিকিট কনফার্ম করিয়ে দেওয়ার দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ‘দুর্নীতি’ বন্ধে নয়া পরিকল্পনার পথে হাঁটছে রেল। ওয়েটিং লিস্টের টিকিটে ‘ক্যাপিং’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
কেমন সেই ব্যবস্থা? রেল সূত্রে খবর, কোনও স্টেশনে দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনের সংরক্ষিত আসনে ‘জেনারেল কোটা’র যা সীমা রয়েছে, তার ২৫ শতাংশের বেশি টিকিটে আর ওয়েটিং লিস্টই হবে না। যদি ২৫ সেই ‘ক্যাপিং’ বা ‘ঊর্ধ্বসীমা’ পেরিয়ে যায়, তাহলে অনলাইন বুকিং উইন্ডোতে ‘নো রুম’ দেখতে পাবেন সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা। এর অর্থ, ওই ট্রেনে আর কোনও সংরক্ষিত আসন খালি নেই। অফলাইন কিংবা স্টেশনের পিআরএস (প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সেন্টার) কাউন্টার থেকে টিকিট কাটলেও বুকিং ক্লার্ক একই বার্তা পাবেন।
রেলমন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, সাধারণ টিকিট তো বটেই। এমনকী ট্রেনের তৎকাল টিকিট কাটার সময়ও এই ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর হবে। রেলের জোনগুলিকে ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সামগ্রিক বিষয়কেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রেল বিশেষজ্ঞ মহল। একটি ট্রেন যাত্রা শুরুর পর, সেটি থামার জন্য নির্ধারিত প্রতিটি স্টেশনেই আলাদা ‘জেনারেল কোটা’ থাকে। এই ‘কোটা’ যেমন ‘অরিজিনেটিং স্টেশন’-এ (অর্থাৎ, যে স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ছে) থাকে, তেমনই মধ্যবর্তী স্টেশনগুলিতেও থাকে। ট্রেনের সংরক্ষিত শ্রেণিভেদে এহেন ‘কোটা’র পরিমাণ বাড়ে বা কমে।
রেলমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের খবর, অরিজিনেটিং থেকে মধ্যবর্তী বা ইন্টারমিডিয়েট স্টেশন - প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংরক্ষিত শ্রেণির জেনারেল কোটায় এই ২৫ শতাংশ ‘ক্যাপিং’ কার্যকর হতে চলেছে। এই ব্যাপারে রেলমন্ত্রকের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইনফরমেশন অ্যান্ড পাবলিসিটি) দিলীপ কুমার ‘বর্তমান’কে বলেছেন, ‘টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা বরাবরই থাকে। নাহলে একের পর এক ওয়েটিং লিস্ট রেল যাত্রীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া কখনওই সম্ভব নয়। তাই নতুন করে এই নিয়ম চালু হচ্ছে, এমন ব্যাখ্যা সঠিক নয়। তবে নিয়মিতভাবে এর পর্যালোচনা হয়। সেইমতো তা কার্যকর হয়। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।’ দালালরাজ রুখতে সম্প্রতি তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে আধার যাচাইয়ের পদ্ধতি গ্রহণ করেছে রেল। আগামী ১ জুলাই থেকেই তা কার্যকর হতে চলেছে। এবার ‘কোটা’র ওয়েটিং লিস্টে ‘ক্যাপিং’ দিয়ে দুর্নীতিতে আরও রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে মন্ত্রক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন