কলকাতা: সোদপুরের নির্যাতিতাকে বাঁকড়ায় ফকিরবাগানের ফ্ল্যাটে আটকে রাখার ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বেতা ও তার ছেলে আরিয়ানের বিরুদ্ধে তদন্ত এগনোর সঙ্গে নতুন তথ্য সামনে আসছে। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ও ল্যাপটপ ঘেঁটে তদন্তকারীরা জেনেছেন, তাতে গুচ্ছ গুচ্ছ পর্ন ভিডিও রয়েছে। কোথাও তরুণীদের মুখ ঢাকা, আবার কোথাও মুখ অর্ধেক খোলা রয়েছে। বিভিন্ন লোকেশনে এগুলি শ্যুট করা হয়েছে। এই ভিডিও ফকিরবাগানের মক্ষীরানি বিক্রি করত মুম্বই সহ বিভিন্ন রাজ্যে পর্ন সাইটের কারবার চালানো ব্যক্তিদের। এমনকী তা বিক্রি হয়েছে থাইল্যান্ডের ‘নীল ছবির কারবারি’দের কাছেও। অবৈধ কারবারের এই টাকাতেই রাতভর পার্টি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মোচ্ছব চালাত শ্বেতা ও তার ছেলে।
সোদপুরের তরুণীকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বেতা প্রথমে ওই তরুণীকে নিগ্রহের কথা স্বীকার করলেও, এখন তা অস্বীকার করছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মারধর করার ছবি তদন্তকারীরা তার সামনে তুলে ধরলে, মহিলা জানায় গোটাটাই ভুয়ো। এই ধরনের ছবি কীভাবে উঠল তা তার জানা নেই। উল্টে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছে। তার দাবি, নির্যাতিতাকে সে আটকে রাখেনি। তিনি তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছায় থাকছিলেন। তবে তাঁকে ভিন রাজ্যে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন খরিদ্দারের কাছে জোর করে পাঠিয়েছে, তা জানিয়েছেন অফিসারদের।
তদন্তকারীরা শনিবার তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ল্যাপটপ, মোবাইল ও সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করে। শ্বেতা তদন্তকারীদের জানিয়েছে, তার বাড়িতে বিভিন্ন জায়গা থেকে তরুণী-যুবতীরা আসত। সেখানে বিভিন্ন কুকর্ম চলত। পাড়ার লোকজন হামলা করতে আসছে কি না, দেখার জন্যই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। মোবাইলের সঙ্গে তার সিসি ক্যামেরার সংযোগ ছিল। বাইরে গেলেও মোবাইল থেকে বাড়িতে নজর রাখত। শ্বেতার মোবাইল ও ল্যাপটপে পর্ন ভিডিও আপলোড করার প্রমাণও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্ত অফিসারদের জানিয়েছে, শ্যুটিয়ের পর পর ল্যাপটপে এডিট করত তার ছেলে আরিয়ান।
প্রতিটি ভিডিও আলাদা আলাদা ফোল্ডারে রাখা থাকত। তার সঙ্গে মুম্বই, দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গায় পর্ন সাইট চালানো অবৈধ কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। মুম্বইয়ে থাকার সময় এই যোগ তৈরি হয়। তাদের চাহিদামতো বিভিন্ন তরুণীদের দিয়ে এ, বি সি-এই তিন ক্যাটাগরির পর্ন শ্যুটিং করানো হতো। তার পর্ণ ভিডিওর চাহিদা ভালো হওয়ায়, মাসে পনেরো থেকে কুড়িটি শ্যুটিং হয়েছে। আবার কোনওমাসে তার বেশি সংখ্যায় তা বানানো হয়েছে। ভিডিওগ্রাফির লোকেশন পর্ন কারবারিরা ঠিক করে দিত। সেইমতো শ্বেতা তরুণীদের সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিয়ে যেত। এর পুরো খরচটাই দিত ওই অবৈধ কারবারিরা। শ্যুটিং শেষ করে তার ভিডিও অবৈধ কারবারিদের কাছে পৌঁছে দিত তার ছেলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন