একবছরে রেজিস্ট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিকেরই, ক্রমেই ভোঁতা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধের শেষ হাতিয়ার - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

একবছরে রেজিস্ট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিকেরই, ক্রমেই ভোঁতা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধের শেষ হাতিয়ার

 


কলকাতা: চারদিকে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি। ক’দিন আগে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সীমিত সময়ের যুদ্ধ তোলপাড় ফেলেছিল বিশ্বে। এখন যুদ্ধ চলছে ইরান আর ইজরায়েলের মধ্যে। 


শুধু রণাঙ্গন নয়, বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক জীবাণুর সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি মুহূর্তে যুদ্ধ চলে মানব শরীরে। সেই যুদ্ধে অস্ত্র হল বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক। যতদিন যাচ্ছে টুকিটাকি সর্দি, কাশি, পেট খারাপের মতো অসুখেও খেয়ালখুশি মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার চলছে। শুধু তাই নয়, যেভাবে ও যখন খুশি অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া এবং বন্ধ করায় সারা বিশ্বে ভবিষ্যৎ মহামারীর নাম হতে চলেছে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট অসুখ। এমনই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। পরিস্থিতি কতটা গুরুতর, তা জানতে ২০২৩-’২৪ ও ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা করেছিল স্বাস্থ্যভবন। তাতে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা চোখ কপালে তোলার পক্ষে যথেষ্ট। জানা গিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এই বছর অর্ধেকের বেশি (৫৫ শতাংশ) অ্যান্টিবায়োটিকের ‘রেজিস্ট্যান্স’ বেড়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, প্রাণঘাতী অসুখ থামাতে হাতেগোনা যে ক’টি অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, তা খুব সাবধানে এবং সীমিতভাবে ব্যবহার করা উচিত। অথচ ‘রিজার্ভ’ গ্রুপের ওষুধগুলিও হু হু করে রেজিস্ট্যান্স হয়ে পড়ছে। যার মানে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ঝুলি থেকে মোক্ষম অস্ত্র বের করার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছে সিংহভাগ অ্যান্টিবায়োটিক। উল্টে নিস্তেজ হয়ে পড়ায় জীবাণুই তাকে বশ করে ফেলছে। 


রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কমবেশি ৫৩ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করেন চিকিৎসকরা। এগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। ‘অ্যাকসেস’, ‘ওয়াচ’ এবং ‘রিজার্ভ’ গ্রুপ।


‘অ্যাকসেস’ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক সচরাচর ব্যাকটেরিয়া দমনে ব্যবহার করা হয়। ‘ওয়াচ’ গ্রুপের ওষুধগুলি ব্যবহার হয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। আর ‘রিজার্ভ’ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক কোনওভাবেই মশা মারতে কামান দাগার মতো করে ব্যবহার করা যাবে না। এগুলি মরণাপন্ন রোগীর প্রাণ বাঁচানোর শেষ অস্ত্র। স্বাস্থ্যদপ্তরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২৩-’২৪ সালের তুলনায় ২০২৪-’২৫ সালে ‘অ্যাকসেস’ গ্রুপের সিংহভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের রেজিস্ট্যান্স কমেছে। এই গ্রুপে রয়েছে ১৬টি ওষুধ। ১২টির ক্ষেত্রেই মিলেছে সুখবর। ‘ওয়াচ’ গ্রুপে রয়েছে ২৮টি অ্যান্টিবায়োটিক। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল, তার মধ্যে আবার ১৯টি অ্যান্টিবায়োটিকেরই রেজিস্ট্যান্স বেড়েছে। মানে চুটিয়ে চলছে খেয়ালখুশির ব্যবহার। আর সর্বশেষ ‘রিজার্ভ’ গ্রুপের অবস্থা আরও ভয়াবহ। সেখানে ৯টির মধ্যে ৭টি অ্যান্টিবায়োটিকের রেজিস্ট্যান্স বেড়ে গিয়েছে। সর্বসাকুল্যে ৫৩টির মধ্যে মাত্র ২৩টি অ্যান্টিবায়োটিক এখনও ব্যাকটেরিয়াকে চোখ পাকানোর ক্ষমতা রাখে। বাদবাকি অ্যান্টিবায়োটিকের সেই অবস্থা নেই। তারা হয়ে পড়েছে নির্বিষ।


স্বাস্থ্যভবনের এক আধিকারিক বলেন, যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সচরাচর বেশি ব্যবহার হয়, মানুষ একটু সচেতন হওয়ায় তার ব্যবহার এখন কমেছে। কিন্তু যেগুলির ক্ষেত্রে পরিমিত ব্যবহার জরুরি, সেগুলির সেবন চলছে মুড়ি-মুড়কির মতো। তাই মারণ ব্যাকটেরিয়াগুলিও আর ভয় পাচ্ছে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...