নয়াদিল্লি, ২৬ জুন: আমারে কাছে সংবিধান সর্বোচ্চ, সংসদ নয়। এমনটাই জানালেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপচি বি আর গাভাই। যার ফলে সুপ্রিম কোর্ট বনাম কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হল বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় নিয়ে মাঝে মধ্যেই উষ্মাপ্রকাশ করতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় শাসকদলের সাংসদদের। এমনকী সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেই তোপ দাগেন উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকারও। তামিলাড়ু সরকার বনাম রাজ্যপালের মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিলে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে রায়ে বলা হয়, রাজ্যপালের কাছ থেকে বিবেচনার জন্য আসা কোনও বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।
যদিও রাষ্ট্রপতির জন্য এইভাবে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া নিয়ে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকার। তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতিকে আদালত নির্দেশ দেয়,এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়। সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্টকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে। বিচার বিভাগের হাতে থাকা সেই ক্ষমতাই এখন গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র’ হয়ে পড়েছে। ভারতীয় গণতন্ত্র এমন জায়াগায় যেতে পারে না যেখানে বিচারপতিরাই আইন তৈরি করেন, কার্যনির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন এবং ‘সুপার পার্লামেন্ট’ হিসেবে কাজ করেন। তাঁর কাছে সংসদই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সংসদের থেকেও সংবিধান সবার উপরে এমনটাই মনে করেন দেশের প্রধান বিচারপতি।
এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অনেকেই বলেন এবং বিশ্বাস করেন যে, সংসদই সর্বোচ্চ। কিন্তু আমার কাছে ভারতের সংবিধান সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। গণতন্ত্রের তিনটি শাখা সংবিধানের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়।’ পাশাপাশি তিনি বিচারপতিদের পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, ‘একজন বিচারপতির সর্বদা মাথায় রাখা উচিত, আমাদের একটা কর্তব্য রয়েছে। আমরা নাগরিকদের অধিকার, সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং আদর্শের রক্ষাকর্তা। আমাদের হাতে শুধুমাত্র ক্ষমতা রয়েছে এমনটা নয়, সঙ্গে দেওয়া রয়েছে কর্তব্যও। আমাদের স্বাধীনভাবে ভাবতে হবে। মানুষ কী বলবে, তা ভেবে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন