ভুয়ো সেনা আধিকারিক সেজে শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেম ও সহবাসের অভিযোগ - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

ভুয়ো সেনা আধিকারিক সেজে শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেম ও সহবাসের অভিযোগ



দুর্গাপুর: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। তারপর বিয়ে করতে নারাজ। এমন প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন এক শিক্ষিকা। তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে তাজ্জব দুর্গাপুরের পুলিস। বেরিয়ে পড়ে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! 

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া যুবক আসলে ভুয়ো সেনা আধিকারিক, আবার কখনও ‘র’-এর এজেন্ট, কখনও আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষকর্তা। তার কাছ থেকে যে কয়েকটি  পরিচয়পত্রটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেগুলিও নকল। কিন্তু একেবারে নিখুঁত আসল! সেটাই বেশি অবাক করে তদন্তকারীদের। আর তাতেই ফাঁস হয়ে পড়ে নকল আধিকারিক সাজিয়ে দেওয়ার একটি প্রিন্টিং প্রেসের। দুর্গাপুরের ওই প্রেসটি সেনা আধিকারিক থেকে শুরু এনআইএ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, আয়কর দপ্তরের আধিকারিকদেরও পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত। পুলিস প্রেসের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জেরা করে জানতে চাইছে এখন পর্যন্ত মোট কতজনকে এই ধরনের আইকার্ড বানিয়ে দিয়েছে সে। এক্ষেত্রে উদ্বেগের বিষয় যেটা, তা হল দেশের গুরুত্বপূর্ণ তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। সন্ত্রাসবাদী হামলা থেকে বিস্ফোরণ, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সহ বিভিন্ন হাড় কাঁপানো ঘটনার তদন্ত করে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাদের আইকার্ড কীভাবে নকল করা হচ্ছিল এবং সেগুলি কাদের দেওয়া হয়েছে, সেটা বেশ ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।    

বুধবার এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় বলেন, ‘নিজেকে সেনা আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক যুবক শিক্ষিকার সঙ্গে সহবাস করে প্রতারণা করেছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পারি, বিধাননগরে একটি প্রিন্টিং প্রেসের মালিক তাকে নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছিল। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’ 

ঘটনার সূত্রপাত গত বছর নভেম্বর মাসে। দুর্গাপুরের এক শিক্ষিকার  ডেটিং অ্যাপে পরিচয় হয় হুগলির ভদ্রেশ্বরের অভিষেক মুখোপাধ্যায় নামে ওই যুবকের। সে নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অত্যন্ত উচ্চ পদাধিকারী বলে পরিচয় দেয়। এহেন কৃতী যুবকের প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন শিক্ষিকা। দু’জনে বিয়ে করার সিদ্ধান্তও নেন। নীল বাতি গাড়ি চড়ে হবু বর আসত দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে শিক্ষিকার বাপের বাড়িতে। হবু শ্বশুর-শাশুড়িও আনন্দে গদগদ। এমন পাত্র কেউ হাতছাড়া করে! অতঃপর, দ্রুত বিয়ের পাকা কথা বলতে হবে। তখনই খোঁজ পড়ে যুবকের বাবা-মায়ের। কিন্তু সে বাবা মায়ের সঙ্গে কোনওমতেই পরিচয় করাতে চায় না। শিক্ষিকা ও তাঁর বাবা-মা আলাপ করতে চাইলে নানা বাহানা দিতে থাকে ওই ধুরন্ধর যুবক। শিক্ষিকার বাবা-মা বুঝে যানন ছেলেটির মতিগতি ভালো নয়। হতেও পারে ঠগবাজ। মেয়েকে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু শিক্ষিকা না শোনেন সাবধানবাণী। উল্টে ঝামেলা বাঁধিয়ে দেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে যুবকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন দুর্গাপুরের একটি হোটেলে। বাবা-মা বুঝতে পারেন, মেয়ে প্রতারিত হচ্ছে। সময় নষ্ট না করে দুর্গাপুরে থানার সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে যোগাযোগ করেন। আইসি সুদীপ্ত বিশ্বাস ডেকে পাঠান অভিষেককে। আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে সে প্রথমে বেশ হম্বিতম্বি করে থানায়। শেষে দীর্ঘ জেরায় অভিষেকের কুকীর্তি ফাঁস হয়ে পড়ে। শুরু হয় হোটেলে অভিযানও।  রুমে তল্লাশি চালিয়ে  বাজেয়াপ্ত করা হয় এনআইএ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সহ কেন্দ্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নকল আইকার্ড। নিজেকে তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিক প্রমাণ করতে অভিষেক সঙ্গে রাখত একটি এয়ারগানও। কিন্তু কীভাবে পেল এইসব আইকার্ড? তদন্তে উঠে আসে দুর্গাপুরের বিধাননগরের সন্দীপ সাহার কীর্তি। এই সন্দীপই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ভুয়ো আইকার্ড বানিয়ে দেওয়ার কাজে অত্যন্ত দক্ষ। তার কাছ থেকেই অভিষেক আইকার্ডগুলি নিয়েছিল। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...