তমলুক: শুক্রবার জগন্নাথ মন্দিরে প্রথম রথযাত্রা। আজ, বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে আসছেন দীঘায়। সড়ক পথে তাঁর আসার সম্ভাবনা বেশি। কোলাঘাট থেকে দীঘা পর্যন্ত জাতীয় সড়কের দু’দিকে পর্যটন দপ্তর ও তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে জগন্নাথ মন্দির এবং মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সহ বড় বড় হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। চণ্ডীপুর, বাজকুল, হেঁড়িয়া, কাঁথি সহ ১০ জায়গায় পুলিসের উদ্যোগে অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবারই অন্যান্য জেলা থেকে বাহিনী চলে এসেছে রথযাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করতে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় তিন হাজার ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এদিন দুপুরে রাজ্য পুলিসের এডিজি বিনীত গোয়েল দীঘায় পৌঁছন। সবমিলিয়ে দীঘায় এখন সাজো সাজো রব। সন্ধ্যার পর বাহারি আলোর রোশনাইয়ে ভাসছে বাংলার নতুন তীর্থক্ষেত্র।
মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে আলোর কারসাজি। বাঁধা হয়েছে মাইক। সড়কের দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড। ভিড় নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর ড্রপ গেট। বুধবার সকাল ১১টা নাগদ কলকাতা থেকে পাঁচ মন্ত্রী পুলক রায়, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দীঘার উদ্দেশে রওনা দেবেন। মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান সুজিত-চন্দ্রিমারা দক্ষতার সঙ্গে সামলেছিলেন। সেই ভরসা থেকেই রথযাত্রাকেও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তাঁদের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথমবার দীঘায় রথযাত্রার সাক্ষী থাকতে বহু ভক্ত হোটেল বুক করেছেন। আজ, ২৫ জুন থেকেই পাঁশকুড়া-দীঘা অতিরিক্ত আরও একটি স্পেশাল ট্রেন চালাবে রেলমন্ত্রক। সকাল ৭টায় ওই ট্রেন চলবে। সাধারণ মানুষজনের ভীষণ সুবিধা হবে। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাই সড়ক পথ এড়িয়ে অনেক পর্যটক ট্রেনে দীঘা যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। লবণ সত্যাগ্রহ স্মারক স্টেশনের টিকিট বুকিং এজেন্ট ভরতচন্দ্র দাস বলেন, ‘দীঘাগামী সকালের স্পেশাল নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে আগ্রহ তুঙ্গে। স্টেশনে এসে অনেকেই খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তাঁরা রথযাত্রায় দীঘায় যেতে চাইছেন।’
রথযাত্রার নিরাপত্তার ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চার জেলাশাসককে মাথায় রেখে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রায় ২০ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে ট্যাগ করা হয়েছে। জগন্নাথ মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রথযাত্রার পথ ও পার্কিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনির্বাণ কোলেকে। জগন্নাথ মন্দিরের ভেতরে পুজো, প্রভুকে রথে ওঠানো, নামানো প্রভৃতি দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) বৈভব চৌধুরী। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর দায়িত্ব বর্তেছে মুখ্যমন্ত্রী সহ সকল ভিআইপির সুষ্ঠুভাবে আসা ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বিষয়ে। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সৌভিক চট্টোপাধ্যায় হোটেল, অতিবৃষ্টি কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে তা মোকাবিলার দায়িত্বে রয়েছেন।
রথের একদিন আগে ২৬ জুন ফের মন্দিরের গর্ভগৃহে জগন্নাথ দেবের দর্শন পাওয়া যাবে। ২৭ তারিখ সকাল ৬ টায় মন্দিরের দরজা খুলে যাবে। সেদিনও সকল ভক্ত ভগবানের দর্শন পাবেন। পাহান্ডি বিজয়ের মাধ্যমে প্রভুকে রথে নিয়ে যাওয়া হবে। বেলার দিকে রথযাত্রা শুরু হবে। ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের মুখে দাঁড়িয়ে সৈকত শহর দীঘা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন