
বারাকপুর: খড়দহের পাতুলিয়ায় এক মাধ্যমিক উত্তীর্ণের রহস্য মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মৃত ছাত্রের নাম সাগর চৌধুরী (১৭)। তিনটে বিষয়ে লেটার মার্কস পেয়ে পাশ করেছে সে। শনিবার ভোরে বাড়ি সংলগ্ন বাগানে আমগাছের নীচে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সাগরকে। এরপর বন্দিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়ে ই এম বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মৃত্যু হয় মেধাবী কিশোরের। কীভাবে ঘর থেকে সাগর সেখানে পৌঁছল, তা জানতে জোরদার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। সাগরের অকাল মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার ফলে বাড়ির সবাই
খুব খুশি ছিল। তবে আরও ভালো ফলের আশা করা সাগর কিছুটা হতাশ ছিল। সন্ধ্যায়
বন্ধুদের সঙ্গে বাড়িতে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করে। রাতে একটি ফোন
পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সাগর। আর বাড়ি ফেরেনি সে। শনিবার ভোর চারটে
নাগাদ তার বাবা শম্ভু চৌধুরী গোঙানির আওয়াজ পান। ওর মা’কে ডেকে ঘরের বাইরে
বেরিয়ে দেখেন, আমগাছের নীচে সাগর পড়ে আছে। তখনও সে বেঁচেছিল। অসহ্য
যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল সে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বন্দিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা জানান, ওই ছাত্রের কোমর থেকে পা পর্যন্ত হাড়
একাধিক জায়গায় ভাঙা ছিল।
সাগরের মৃত্যুর খবর পেয়ে পাতুলিয়ার বাড়িতে যায়
রহড়া থানার পুলিস। পৌঁছন স্থানীয় পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কিশোর
বৈশ্য। তিনি বলেন, বাড়ির দরজার সামনেই ছেলেটিকে পাওয়া গিয়েছে। কী করে
মৃত্যু হল, তা নিয়ে চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। ঘটনাটি আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা
নাকি ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর, সব দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মৃত
সাগরের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাগরের বাবা শম্ভুবাবু বলেন,
আমার ছেলে পাতুলিয়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে পড়ত। মাধ্যমিকে তিনটি বিষয়ে লেটার
পেয়েছে। তবে আরও ভালো ফলের প্রত্যাশী ছিল। একাদশে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে বলে
ঠিক করেছিল। সে সংক্রান্ত পড়াশোনাও শুরু করে দিয়েছিল। আমরা (মা আর বাবা)
রাতে অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিলাম। সাগর শুয়েছিল অন্য ঘরে। কখন যে ঘর থেকে
বেরিয়েছিল, তা জানতে পারিনি। কী করে এই ঘটনা ঘটল, বুঝতে পারছি না। ওর
শরীরের বিভিন্ন জায়গার হাড় ভাঙা রয়েছে, কিডনিতেও চোট ছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন