
নয়াদিল্লি ও কলম্বো: পহেলগাঁও কাণ্ডের জঙ্গিরা কি শ্রীলঙ্কায়? শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ চেন্নাই থেকে কলম্বো পৌঁছনো শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের এক বিমানের (ফ্লাইট নম্বর-ইউএল ১২২) অবতরণ পর্বে হাই অ্যালার্ট জারি, বিমানবন্দরে ‘লকডাউন’ ঘোষণা এবং বিস্তর খানাতল্লাশিতে সেই জল্পনাই তুঙ্গে। প্রেস বিবৃতি জারি করে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, ওই বিমানটি চেন্নাই ছাড়ার পর সেখানকার এরিয়া কন্ট্রোল সেন্টারের তরফে জানানো হয়, ভারতে ‘ওয়ান্টেড’ এক ব্যক্তি ওই বিমানে রয়েছেন। এরপরই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয় কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানটি অবতরণের পর খানাতল্লাশি শুরু করে সে দেশের সেনা, পুলিস ও এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ইউনিট। তুমুল আলোড়ন শুরু হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবার ‘মুখোশ’ সংগঠন টিআরএফ ওই হামলার দায় স্বীকার করে। ঘটনার পর নিরন্তর তল্লাশি চললেও, এখনও পাকড়াও করা যায়নি হামলকারী বলে চিহ্নিত কাউকে।
শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমের দাবি,
বিমানে তল্লাশি সত্ত্বেও সন্দেহভাজন কাউকে পাওয়া যায়নি। ফলে ‘সিকিউরিটি
ক্লিয়ারেন্স’ নিয়ে দু’ঘণ্টা পরে ওই বিমানটি পরবর্তী গন্তব্য সিঙ্গাপুরের
উদ্দেশে রওনা দেয়। কলম্বো বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কর্মীদের ‘তৎপরতা’ নিয়ে
নয়াদিল্লির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও সূত্রের খবর, ওই বিমানে
সন্দেহভাজন দুই যাত্রীর হদিশ মিলেছে। তারা পাক নাগরিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে তারা ভ্রমণ করছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও
দু’জনের সন্ধান মিলেছে। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, ওই দুই পাক নাগরিকের বিমানের
টিকিট যেখান থেকে করা হয়েছিল, সেই বুকিং সংস্থার পরিচয় মিলেছে। সংস্থার
লোকজনকে জেরা করা হচ্ছে। তবে যে বিষয়টি সন্দেহের কারণ আরও বাড়িয়েছে, তা
হল, ওই দুই পাক নাগরিকের কাছ থেকে চার রকম পরিচয়পত্র মেলা। তাতে যেমন
ভারতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তেমনই রয়েছে পাকিস্তানেরও। তবে সন্দেহভাজন ওই দুই
পাক নাগরিকের সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার সংস্রব রয়েছে কি না, সে বিষয়েও মেলেনি
কোনও প্রতিক্রিয়া।
শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে,
বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে বিমানটি কলম্বোয় পৌঁছয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে
বিমানটি ঘিরে জোরদার তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমাদের কাছে যাত্রী ও
বিমানকর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাই সর্বাগ্রে। কলম্বো বিমানবন্দরে
সেনা-পুলিসের এহেন তৎপরতার উৎস কী? চেন্নাই এরিয়া কন্ট্রোল সেন্টারের তরফে
জানানো হয়েছে, অজানা ইমেল আইডি থেকে একটি বার্তা আসে। সেখানে দাবি করা
হয়, কলম্বোগামী ওই বিমানে সন্দেহভাজন লস্কর জঙ্গিরা রয়েছে। বিমান চেন্নাই
ছাড়ার আগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত রুটিন তল্লাশিতে কিছু না মিললেও, কোনও
ঝুঁকি নিতে চায়নি কর্তৃপক্ষ। ইমেলে আসা বার্তাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয় কলম্বো
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে আসা সেই ‘টিপ অফ’এর
ভিত্তিতেই বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি চালায় সে দেশের
সেনা-পুলিস।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন