দু’টোর আগেই স্কুল ছুটি! হঠাৎ জেলাশাসককে দেখে ভূত দর্শন - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫

দু’টোর আগেই স্কুল ছুটি! হঠাৎ জেলাশাসককে দেখে ভূত দর্শন

দু’টোর আগেই স্কুল ছুটি! হঠাৎ  জেলাশাসককে দেখে ভূত দর্শন

বর্ধমান: সাকুল্যে চারজন শিক্ষক। দু’জন বেরিয়ে গিয়েছেন শহরে। তাঁদের নাকি ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে। বাকি দু’জনের উপর বর্তে ছিল ক্লাস নেওয়ার। তাঁরাও দু’টোর আগে স্কুল ছুটি দিয়ে ব্যাগ গোছাচ্ছিলেন। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি। আর তখনই গেটের সামনে এসে দাঁড়াল নীলবাতি লাগানো একটি গাড়ি। নেমেই সটান স্কুলের ভিতর। স্কুলটি খণ্ডঘোষের পলেমপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়। আগুন্তুককে দেখে দুই শিক্ষকের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়! এতো স্বয়ং জেলাশাসক আয়েশা রানি এ! সঙ্গে মহকুমা শাসক বুদ্ধদেব পান। থতমত খেয়ে যান দুই শিক্ষক। জেলাশাসককে দেখার পর তাঁরা কি করবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না। সামনে হাতজোড় করে দাঁড়ালেন দু’জনেই। জেলাশাসক জানতে চাইলেন ছাত্র-ছাত্রীরা কোথায়। এখন তো দুটো বাজে। এর মধ্যেই স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছেন নাকি? উত্তর দিতে গিয়ে গলা ধরে আসে দুই শিক্ষকের। সমস্বরে বলতে থাকেন, ম্যাডাম গ্রামে গাজন চলছে। সেই কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি চলে গিয়েছে। 
টেবিলে পড়েছিল রেজিস্টার খাতা। তার পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে জেলাশাসক ফের জানতে চাইলেন, দেখছি তো আপনারা চারজন শিক্ষক। দু’জন রয়েছেন। বাকিরা গেলেন কোথায়? দুই শিক্ষকের জবাব, ‘ম্যাডাম ওঁরা বর্ধমানে কাজের জন্য গিয়েছেন।’ জেলাশাসক বললেন, ‘সেতু পেরলেই তো বর্ধমান শহর। আশা করা যায়, ওঁরা তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। ততক্ষণ স্কুলে অপেক্ষা করছি।’ দুই শিক্ষক বেশ বেকায়দায় পড়ে যান। কারণ, ওই দু’জন শিক্ষক আর স্কুলে ফিরবেন না। তাঁরা শহরে কাজ মিটিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার কথা।  
জেলাশাসক এবার ‘অপেক্ষা করা’র ফাঁকে মিড ডে মিলের হিসেব দেখতে শুরু করেছেন। একের এক ধরে ফেলছেন গরমিল। হিসেব অনুযায়ী, যে পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী মজুত থাকার কথা, তা ছিল না। রেজিস্টার খাতাতেও বিস্তর ত্রুটি। স্কুলের প্রতিটি বিষয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকেন জেলাশাসক। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও ওই দুই শিক্ষক আসেননি। পত্রপাঠ জেলাশাসক শিক্ষা দপ্তরকে  পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, জেলাশাসক আগাম খবর দিয়ে স্কুলে যাননি। সেটা করলে হয়তো স্কুল কর্তৃপক্ষ সবকিছু গুছিয়ে রাখত। জেলাশাসক আচমকা স্কুলে উপস্থিত হয়ে সেখানকার বাস্তব ছবি দেখলেন। জেলাশাসক বলেন, ‘এভাবেই বিভিন্ন স্কুলে হঠাৎ করেই পরিদর্শনে যাব। কোথাও গাফিলতি দেখা গেলেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্কুলে থাকতে বাধ্য। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ দুটোর আগেই ছুটি দিয়ে দিয়েছিল। সেটা কখনই করা যায় না। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের বহু স্কুলে পঠন-পাঠন শিকেয় উঠেছে। ড্রপআউট বেড়ে গিয়েছে। সেটা কমাতেই জেলাশাসক নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। হঠাৎ করে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বেশ কিছু স্কুলছুট পড়ুয়াকে নতুন করে শিক্ষার আঙিনায় ফেরানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে জন্য  জেলাশাসক আরও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি নিজেও স্কুলে গিয়ে পঠন-পাঠনের মান যাচাই করছেন। তবে, এত কিছুর পরেও পলমপুরের ওই স্কুলের হতশ্রী ছবি দেখে হতবাক জেলাশাসক।-

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...