
কলকাতা: যাত্রীবোঝাই মেট্রো চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মেট্রোপথ। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সম্পূর্ণ রুটে যাত্রী পরিষেবা শুরুর লক্ষ্যে রবিবার এই অংশে চূড়ান্ত পরিদর্শন করেন ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’ সুমিত সিংহল। উল্লেখ্য, মাটির নীচ দিয়ে মেট্রোর লাইন পাতার সময় ২০১৯ সালে বউবাজার অঞ্চলে টানেল বোরিং মেশিন ভেঙে সুড়ঙ্গে জল ঢুকে যায়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তারপর ২০২২ সালে আরও দু’দফায় জল ঢুকে পরিস্থিতি জটিল হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এক দল বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের দক্ষতায় বউবাজারে পূর্বমুখী ক্ষতিগ্রস্ত টানেল ১২০ বছরের স্থায়িত্ব পেয়েছে। কংক্রিটের টানেলকে ইস্পাতের চাদর দিয়ে মুড়ে নজির সৃষ্টি করেছেন নির্মাণকারী সংস্থা আইটিডি সিমেনট্রেশনের স্থপতিরা। বউবাজারের সেই অংশই এদিন খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন সিআরএস। প্রথমে ট্রলিতে চেপে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত যান। তারপর আস্ত মেট্রো রেক ৮৫ কিলোমিটার গতিবেগে চালিয়ে কম্পন ও টানেলের স্থিতিস্থাপকতা পরখ করেন তিনি।
সূত্রের
খবর, পরিদর্শনের পর সার্বিকভাবে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিআরএস। বউবাজারে
যেখানে টানেল বিপর্যয় হয়েছিল, সেই অংশের কাজেও সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএস
সুমিত সিংহল খুশি বলেই খবর। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এই আড়াই কিলোমিটার
পাতালপথে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, ক্রস প্যাসেজ, ইমারজেন্সি রেসপন্স
ব্যবস্থাপনা হাতেকলমে পরীক্ষা করেন তিনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা, টানা কয়েক
ঘণ্টা ধরে চলে এই পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ। সিআরএস বিকেলে সল্টলেক ডিপোতে
যান। সেখানকার কন্ট্রোল রুম থেকেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হবে
সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মেট্রো করিডর। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে
হাওড়া ময়দান—জুড়ে যাবে যমজ শহরের দুই প্রান্ত। কলকাতা মেট্রোর এক কর্তা
বলেন, ‘সিআরএস সিগন্যালিং সংক্রান্ত কয়েকটি ছোটখাটো বিষয় সংশোধনের
পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এবং দ্রুততার সঙ্গে সেই
কাজগুলি শেষ করব। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সিআরএসের চূড়ান্ত ছাড়পত্র চলে
আসবে বলে আশা করছি।’ এরপর রেল বোর্ডের সম্মতি মিললেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে
গোটা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো-পথে যাত্রী পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে
হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ-সল্টলেক সেক্টর ফাইভ মেট্রো রুট চালু
রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন