
হাওড়া: পণ বাবদ
মেয়ের শ্বশুরবাড়িকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে পারেনি অসহায় পরিবার। তা নিয়ে
বিয়ের পর থেকেই খোঁটা শুনতে হতো নববধূকে। মাঝেমধ্যেই জুটত মারধরও।
সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা চরমে পৌঁছয়। তার জেরে গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরের
অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার
কালীবাবুর বাজার এলাকায়। মারের চোটে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে গৃহবধূ।
তাঁর পরিবারের তরফে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে হাওড়া থানায় লিখিত অভিযোগ
দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত
ফেব্রুয়ারি মাসে বাঁকড়ার সলপের বাসিন্দা রাখীর সঙ্গে কালীবাবুর বাজার
এলাকার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা সমীরের দেখাশোনা করে বিয়ে হয়। বিয়ের সময়
দশ লক্ষ টাকা পণ দাবি করে যুবকের পরিবার। তাতে রাজি হয়েছিলেন পাত্রীর বাবা
পেশায় গাড়িচালক লক্ষ্মণ সাহু। পারিবারিক সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি ও
দেনা করে পণের পাঁচ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে পেরেছিলেন তিনি। পাত্রপক্ষকে কথা
দিয়েছিলেন, বিয়ের পর যেভাবেই হোক বাকি টাকা জোগাড় করে দেবেন। অভিযোগ,
বিয়ের পর থেকেই পণের বাকি টাকার দাবিতে স্বামী সমীর সাহু স্ত্রীকে চাপ
দিতে শুরু করে। শ্বশুরবাড়িতে মাঝেমধ্যেই রাখীকে খেতে দেওয়া হতো না বলে
অভিযোগ। এরপর শুরু হয় শারীরিক অত্যাচার। স্বামীর পাশাপাশি দেওর ও শাশুড়িও
তাঁকে মারধর করত বলে অভিযোগ। চৈত্র সংক্রান্তির দিনে মারধরের ঘটনা চরমে
পৌঁছয়। গৃহবধূর পরিবারের দাবি, রাখীকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারে
শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মারের চোটে তাঁর কানের পর্দা ফেটে গিয়েছে। গুরুতর জখম
অবস্থায় গৃহবধূকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বর্তমানে
তিনি চিকিৎসাধীন। কানে ঠিকমতো শুনতে পারছেন না তিনি।
গৃহবধূর অভিযোগ,
‘প্রায়ই আমাকে মারধর করা হয়। ঘর তৈরির জন্য পণের বাকি টাকা ও সোনার গয়না
বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত ওরা। আমি চিৎকার করায় সেদিন ওরা আমার
গলা টিপে ধরেছিল। আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল।’
গৃহবধূর পরিবারের
তরফে হাওড়া থানায় অভিযুক্ত স্বামী সমীর সাহু ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে
লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে
গ্রেপ্তার করেনি পুলিস। রাখীর দিদি ইন্দু শাহ বলেন, ‘বোনের শ্বশুরবাড়ির
তরফে প্রথমে বলা হয়েছিল সমীর অস্থায়ী পদে সরকারি চাকরি করে। পরে জানতে
পারি, সব মিথ্যা। এর আগেও একবার বিয়ে করেছিল সে। পণের দাবিতে ওই স্ত্রীকেও
একইভাবে অত্যাচার করেছে ওরা। পুলিস ব্যবস্থা নিক।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন